কৃষকের স্বপ্ন পচে যাচ্ছে পানির নিচে

প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০১৭, ২১:৫৪ | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৭, ২৩:৫৩

পাবেল খান চৌধুরী, হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। কয়েক দিনের অবিরাম ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার ভাটি এলাকার অবশিষ্ট বোরো ফসলও তলিয়ে গেছে। যে সময় কৃষক নতুন ফসল ঘরে তোলার কথা, সে সময় চোখের সামনে বানের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে কাচা-পাকা ফসল। পানির নিচে পচেছে কৃষকের স্বপ্ন।

উজানের ঢলে বাঁধ ভেঙে হাওরের লাখ লাখ একর জমির বোরো ধানসহ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে গত কয়েক দিনে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। গত ৭২ ঘণ্টায় জেলার খোয়াই, কুশিয়ারা, কালনী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিভিন্ন স্থানে বাঁধ উপচে পানি ঢুকে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ প্লাবিত হয়। ফলে কৃষকের ঘরের গোলা শূন্য হয়ে খাদ্যাভাব দেখা দেয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গত রোববার সকাল নয়টা থেকে খোয়াই ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে ফসলের ক্ষতি হয়। সম্প্রতি অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বানিয়াচং, লাখাই ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হাওর।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে জেলার আটটি উপজেলায় মোট ১ লাখ ১৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছিল। এপ্রিলের শুরুতে ভারী বৃষ্টিপাতে জেলার হাওর এলাকার আবাদ করা প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে যায়। বাকি জমি কিছুটা রক্ষা পেলেও গত চার দিনের অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তাও শেষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাওহীদুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার ১৭ এপ্রিল সকাল থেকে জেলার খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও আজমিরীগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে রয়েছে।
তাওহীদুল ইসলাম বলেন, চলতি মাসের বৃষ্টিপাত গত ১৬ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। পুরো এপ্রিল মাসে যেখানে ২২২ মিলি বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা সেখানে গত ৪ দিনেই (বৃহস্পতিবার-রোববার) সে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়। অতি বর্ষণের ফলে নদ-নদীগুলোর বাঁধ উপচে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হওয়ায় বোরো ফসল বিনষ্ট হচ্ছে।

ইতিমধ্যে বানিয়াচঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হাওর পরিদর্শনে যান দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মো. আবু হাসিম, বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বন্দীপ কুমার সিংহ।

বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, তারা ৫৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছেন।  ইতোমধ্যে ২৫ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫এপ্রিল/মোআ)