অবশেষে মৌচাক-মালিবাগ সড়ক মেরামত শুরু

প্রকাশ | ০৩ মে ২০১৭, ২১:১২ | আপডেট: ০৩ মে ২০১৭, ২১:২৫

আউয়াল খাঁন, ঢাকাটাইমস

‘ভোগান্তির অপর নাম মৌচাক-মালিবাগ-শান্তিনগর’ অপবাদটি অবশেষে ঘুচতে যাচ্ছে। অবসান হতে যাচ্ছে দীর্ঘ চার বছর ধরে চলা ভোগান্তি। সড়কের একাংশের খানাখন্দ এরই মধ্যে মেরামত হয়েছে, বাকি আছে কেবল পিচ ঢালার কাজ। সড়কের অপর অংশেও এই কাজ শুরু এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

মালিবাগ-মৌচাক-মগবাজারে উড়াল সড়কের কাজ চলমান থাকলেও গত প্রায় চার বছর ধরে নিচের মূল সড়কটি সংস্কারের অভাবে বিভিন্ন অংশে খানা-খন্দ তৈরি হতে থাকে। দিন যত যায় ধীরে ধীরে সেই ভাঙনের পরিমাণ আরো বাড়তে থাকে। বৃষ্টির দিন ভোগান্তি উঠে চরমে। চলতি এপ্রিলে ৩৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি এলাকাটিতে তলিয়ে দেয় আর পথ চলতে গিয়ে দুর্বিসহ পরিস্থিতিতে পড়েন যাত্রীরা।

ঢাকাটাইমসসহ দেশের মূল ধারার প্রায় সব গণমাধ্যমে গত এপ্রিলে নিয়মিত প্রতিবেদনের বিষয় হয়েছে মালিবাগ-মৌচাক সড়কের পরিস্থিতি। আর এতদিন গা না করলেও এবার জনভোগান্তির অবসানে উদ্যোগী হয়েছে কর্তৃপক্ষ।

গত সপ্তাহ থেকেই মৌচাক-মালিবাগ ও শান্তিনগর মূল সড়কের সাংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। সড়ক জুড়ে একই সাথে চলছে পয়োনিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ ও মূল সড়কের সংস্কারকাজ।

মৌচাক মোড় থেকে ডান পাশ ধরে মালিবাগ হয়ে শান্তিনগর পর্যন্ত  সড়কটিতে এরই মধ্যে সিমেন্ট-পাথরের ঢালাই কাজ করা হয়েছে। তবে একই অংশে আরো কিছু কংক্রিটের ও পিচের ঢালাই কাজ বাকি থাকাতে এখনই কোনো ভারী যান এই পথটি ধরে চলতে দেয়া হচ্ছে না।

মৌচাক মোড় থেকে ডান পাশ ধরে মালিবাগ হয়ে শান্তিনগর পর্যন্ত কংক্রিটের ঢালাইয়ের কাজ শেষ করে একই পাশ ধরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন কলেজের সামনে প্রায় ৫০ মিটারের মতো অংশে ঢালাই করা হয়েছে। এই অংশগুলোর কাজ আগে শেষ করে পরবর্তি পর্যায়ে মৌচাক থেকে শান্তিনগর ও রাজারবাগ যেতে বাম পাশের মূল সড়কটির বাকি পথ সংস্কার করা হবে বলে সংস্কার কর্মীদের কাছ থেকে জানা যায়।

মৌচাকের এই অংশটির কাজ শুরু হতে না হতে এরই মধ্যে এলাকাবাসীর, পথচারী ও যাত্রিদের মুখেও হাসি ফুটতে শুরু করেছে। সমতল পথটি ধরে চলাচলের আনন্দ ধরে রাখতে না পেরে ঢাকাটাইমসের কাছে উচ্ছাস প্রকাশ করেন মাহরুফ, আমান, ফিরোজ, তিন্নি আক্তারসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। একজন বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়া এতদিন স্কুলে যেতেই ইচ্ছা করত না। গত চাইর পাঁচদিন এদিক দিয়া হাটতে যে কত ভাল লাগে বুঝাতে পারব না।’

উল্টো পাশধরে চলা বাসের চালক আসলাম সিকদার বলেন, ‘এতো দিনে ঝুকি ছাড়া শান্তিতে গাড়ি টানতে পারমু। খালি অপেক্ষায় আছি কবে এই রাস্তায় গাড়ি টানা অনুমতি পামু।’   

পথচারী মোবাশ্বের হোসেন, যাত্রী প্রবীণ কুমারও খুশি। প্রবীণ বলেন, ‘কতদিন পর জাহান্নাম থেইকা মুক্তি পামু এই টাই শুধু কল্পণা করছি। ড্রেন ব্যবস্থা ভাল না তাই বৃষ্টিতে পানি জমতে পারে। তারপরও হাঁটু পানি জমলেও কোন সমস্যা নাই, শুধু হাঁটু পর্যন্তই ভিজব। এতোদিন তো হাঁটু পানি হইলেই ভাঙা রাস্তায় পড়ে গলা পর্যন্ত ভিজতাম।’  

সড়কটির সংস্কার করা অংশে বৃষ্টির জমে থাকা পানি মাড়িয়ে পথচারীদের চলাচলে এখন আর কোন ঝুঁকি দেখছেন না বলে জানান মালিবাগ-মৌচাকের ফুটপাত ও মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও।

 

(ঢাকাটাইমস/০৩মে/এএকে/ডব্লিউবি)