বড়শিতে ১১ কেজির কাতল

মুজাহিদুল ইসলাম নাঈম, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৫ মে ২০১৭, ১৪:২৯ | প্রকাশিত : ০৫ মে ২০১৭, ১৪:১০

বড়শি দিয়ে মাছ ধরাই বদর উদ্দিনের পেশা। প্রায় প্রতিদিনই তিনি বড়শি ফেলেন বাড়ির পাশের মধুমতি নদীতে। কোনো দিন বড় মাছ জোটে, কখনও জোটে না। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার বড়শিতে যে কাতল মাছ গেঁথে তা এলাকায় তৈরি করেছে বিস্ময়। বাজারে নিয়ে মেপে দেখা যায়, মাছটির ওজন ১১ কেজি। দরিদ্র বদর উদ্দিনের এই মাছ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। তিনি পাঁচ হাজার টাকায় সেটি বেচে দেন।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় গোপালপুরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা মধুমতি নদীতে বদর উদ্দিন ছিপ ফেলেন বৃহস্পতিবার সকালেই। সারা দিন যায় একটিও মাছ উঠে না। সন্ধ্যা নামার আগে আগে হতাশ বদর যখন চলে যাবেন বলে ভাবছিলেন তখনই তার টোপ গিলে একটি মাছ। ছিপে টান দিতেই তা গেঁথে যায় মাছের মুখের ভেতর। এরপর শুরু হয় লড়াই।

লড়াইই বলতে হয়, কারণ, এত বড় মাছ তো আর সহজে তোলা যায় না। মাছটি ঘণ্টা দেড়েক সময় ধরে সুতা ছিড়ে চলে যেতে চেয়েছে। তবে মানুষের শক্তির কাছে হার মেনে এক সময় তীরের দিকে চলে আসে। সন্ধ্যার আগে আগে বড়শিতে ধরা পড়া মাছটি তুলতে তুলতে সাতটা পর্যন্ত বেজে যায়।

মাছটি পানি থেকে তোলার পর বদর উদ্দিনের চক্ষু চরক গাছ। যে শক্তি দিয়ে মাছটি মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেছিল, তাতে সেটি যে অনেক বড়, সেটি বদর বুঝতে পেরেছিলেন। তবে এটি এত বড়, সেটি বুঝতে পারেননি। পানি থেকে তোলার পর তার মুখে দেখা দেয় চওড়া হাসি।

নদী থেকে তোলার পর পর বদর উদ্দিন মাছটি নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গোপালপুর বাজারে যান বিক্রি করতে। এত বড় মাছ বড়শিতে ধরা পড়েছে জানার পর খবরটি ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। শত শত মানুষ ভিড় জমায় মাছটি দেখতে। মোবাইল ফোনে উঠতে থাকে ছবি। কেউবা তোলেন সেলফি।

সেখানে উপস্থিতদের একটি বড় অংশই কখনও এত বড় মাছ দেখেননি। তাই ছবি তোলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সেগুলো আপলোড করতে থাকেন অনেকে। আর বদর উদ্দিন গর্বভরা হাসি দিয়ে মাছের পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন।

বদর বলেন, ‘প্রত্যেক দিন আমি বরশি বাই। মাঝে মধ্যে মাছ পাই, মাঝেমধ্যে পাই না। সারাদিন বইস্যা থাকি। একটা বা দুইটা মাছ পাই। কাইল সকালে বরশি পাতছি, সন্ধ্যার আগে টান পড়ছে। এরপর মাছটা তুইল্যা আমি বাজারে আনছি।’

বদর জানান, এর আগেও এ রকম বা এর চেয়েও বড় মাছ তিনি ধরেছেন বড়শি দিয়েই। তবে মধুমতি নদীতে এই আকারের মাছ এই প্রথম ধরেছেন তিনি।

গ্রামের বাজারে ১১ কেজি ওজনের মাছ কেনার মত লোক পাওয়া কঠিন। বদরকেও তাই মাছটি বিক্রি করতে বেশ খানিকটা সময় অপেক্ষা করতে হলো। পরে উজ্জ্বল শেখ নামে একজন মাছটি কিনে নেন পাঁচ হাজার টাকায়। তিনিও মাছটি কিনে তাকে পাশে নিয়ে ছবি তুলতে ভুল করেননি।

ঢাকাটাইমস/০৫মে/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :