মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে: দোলন

প্রকাশ | ১৩ মে ২০১৭, ০৯:৪১ | আপডেট: ১৩ মে ২০১৭, ১৮:২৬

আলফাডাঙ্গা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

 

মাদক সামাজিক ব্যাধি। তরুণ ও যুবকদের একটি অংশ এই ব্যাধিতে আক্রান্ত। ধীরে ধীরে এটি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। সামাজিকভাবে এখনই যদি প্রতিরোধ গড়ে তোলা না যায় তবে তরুণ প্রজন্মের জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যত বয়ে আনবে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার কুচিয়াগ্রামে আয়োজিত মাদকবিরোধী মত বিনিময় ও উন্নয়ন সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করেছিল কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশন।

ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং ‘ঢাকাটাইমস’ ও সাপ্তাহিক ‘এই সময়’ সম্পাদক দোলন বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি শতভাগ মাদকবিরোধী। আমি চাই না আমাদের সন্তানরা মাদকের কবলে পড়ে অকালে হারিয়ে যাক। কারণ মাদক মানুষের স্বাভাবিক বুদ্ধিবৃত্তি কমিয়ে দেয়।’ তিনি বলেন, ‘সারাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে। এই উন্নয়ন অগ্রগতিকে অব্যাহত রাখতে হলে এখনকার যুব সমাজ, শিক্ষার্থী ও ছেলে-মেয়েদের হাল ধরতে হবে। মাদককে না বলে প্রত্যেকটি ঘরে এর বিরূদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’

ঢাকাটাইমস সম্পাদক বলেন, ‘দেশের আজকের অগ্রগতির অগ্রনায়ক আমাদের নেত্রী, প্রধানমন্ত্রী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি যখনই সারাদেশে সভা-সমাবেশ করেন সেখানেই মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেন। তিনি আলফাডাঙ্গাকে নিজের উপজেলা মনে করেন। এই কারণেই আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা যদি আলফাডাঙ্গাকে মাদকমুক্ত উপজেলা উপহার দিতে পারেন তাহলে আমার বিশ্বাস আলফাডাঙ্গা পিছিয়ে থাকবে না। আলফাডাঙ্গা উন্নয়নে সবার চেয়ে এগিয়ে থাকবে।’

দোলন বলেন, ‘অনেকে বলেছেন এই গ্রাম উন্নয়নে পিছিয়ে। আমি যদিও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নই, তবুও কথা দিচ্ছি আপনাদের এই গ্রাম উন্নয়নে পিছিয়ে থাকবে না’।

কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘অতীতে আমাদের সমস্যার কথা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দিতে কার্পণ্য ছিল। অথবা পৌঁছে দেয়া হতো না। কিন্তু এখন বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা সমস্যার কথা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারি। পৌঁছে দিলে কাজ হয়ে যায়। ছোটো একটা উদাহরণ দিচ্ছি, আপনারা অনেকে শুনছেন। অনেকে হয়তো জানেন না। আলফাডাঙ্গায় ৫০০ আসন বিশিষ্ট একটি অডিটরিয়াম হচ্ছে। এই অডিটরিয়ামের জন্য সরকার ইতোমধ্যে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। অবশ্যই আমি জোর গলায় বলব, এই প্রকল্প আনার পেছনে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি।’

এই সময় সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এখন যেমন জানেন আলফাডাঙ্গা পিছিয়ে, অতীতে তাকে এই তথ্য দেয়া হয়নি। মাননীয় এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ফরিদপুরের মানুষ। তিনি আমাদের অত্যন্ত ভালোবাসেন। দু’হাত উজাড় করে দিচ্ছেন। এই অডিটরিয়ামের জন্য সরকারের অত্যন্ত দুজন প্রভাবশালী মন্ত্রী তাদের উপজেলায় বরাদ্দ চেয়েছিলেন। বলা হয়েছে, সরকারের আগামীতে যে বাজেট বরাদ্দ হবে সেখান থেকে আপনারা পাবেন। কিন্তু এবার আলফাডাঙ্গায় দিতে হবে।

কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘বারাংকুলায় ব্রিজ হচ্ছে। কাজ চলছে। অনেকে বলেছিলেন এটা অসম্ভব। গত ডিসেম্বরের কথা। কতিপয় নেতৃত্ব বলল, বছরের পর বছর চেষ্টা করা হয়েছে। কাজ হয়নি। আসলে মিথ্যা কথা। আমার চেষ্টায় যদি তিন মাসের মধ্যে সরকার সেখানে ব্রিজ নির্মাণ করতে পারেন, অনেক বড় বড় নেতা আছেন, পদাধিকারী নেতা আছেন তারা চেষ্টা করে পারলেন না এটা কি বিশ্বাসযোগ্য।? তার মানে চেষ্টা হয় না। মানুষ যদি সমস্যায় থাকে নেতাদের কাছে গিয়ে ধর্না দেবে। আমার নীতি হচ্ছে এই অঞ্চল উপকৃত হবে, প্রত্যেকটি মানুষ ভালো থাকবে। এটি আমার চাওয়া। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। আপনারা উন্নয়নের জন্য একতাবদ্ধ থাকবেন। ইনশাআল্লাহ আলফাডাঙ্গা-বোয়ালমারী-মধুখালী একটি মডেল সংসদীয় আসন হবে।’

দোলন বলেন, ‘অতীতে যত সংসদ নির্বাচন হয়েছে প্রত্যেকবার এখানে নৌকা মার্কার প্রার্থী নির্বাচিত হয়। তাহলে আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় থাকে তাহলে আমরা কেন উন্নয়ন বঞ্চিত থাকবো? শেখ হাসিনা যদি প্রধানমন্ত্রী থাকেন, আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো? শেখ হাসিনা আমাদের বঞ্চিত করতে চান না। তিনি আমাদের এগিয়ে রাখতে চান। পিছিয়ে রাখতে চান কতিপয় নেতা। কারণ যদি মানুষের সমস্যার সমাধান হয়ে যায় নেতাদের কাছে তো মানুষ ধর্না দেবে না। এই নীতিতে হয়তো কেউ কেউ বিশ্বাসী। আর আমরা মনে করি প্রত্যিকটি অঞ্চলের সমান উন্নতি হোক।’

আওয়ামী লীগ নেতা দোলন বলেন, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের গ্রাম মধুখালীর কামারখালীতে রউফ নগর উন্নয়ন বঞ্চিত এলাকা। ওখানে একটি পাবলিক লাইব্রেরি আছে। স্মৃতি জাদঘুর আছে অরক্ষিত। বিদ্যুৎ ছিল না। আমরা ঘুরে এসেছি। সরকারের সর্বোচ্চ মহলে বিষয়টি তুলে ধরেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা সেখানে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন।

সভায় ফরিদপুর জেলা পরিষদ সদস্য ও কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের পরিচালক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আরিফুর রহমান দোলন যে উন্নয়নমূলক কাজ করছেন তা তিনি আপনাদের ভালোবাসার জন্য করেছেন। কোনো কিছুর বিনিময়ে নয়। বাংলাদেশের উন্নয়নের বরাদ্দ যেখানে হয় সেখানে তার একটি অবস্থান আছে। অনেক সময় জনপ্রতিনিধিরাও সেখানে যেতে পারে না। আমাদের কাজের মানুষ চিনতে হবে। আমরা আরিফুর রহমান দোলনের নেতৃত্বেই এলাকার উন্নয়ন চাই। আপনারা পাশে থাকবেন দোলন সাহেবকে উৎসাহ দেবেন যাতে করে তিনি আরও বেশি করে এলাকার মানুষের সেবা করতে পারেন।’

কুচিয়াগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক বাকিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শেখ শওকত আহমেদ, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শেখ আব্বস উদ্দিন, ২নং গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইনামুল হাসান, ফরিদপুর জেলা কৃষক লীগ নেতা শেখ মোক্তার হোসেন, আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মোরশেদুর রহমান তাজ, বোয়ালমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সিদ্দিকুর রহমান, বুড়াইচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহাব পান্নু, গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান ইকু, আলাউদ্দিন আলী প্রমুখ।

ঢাকাটাইমস/১৩মে/প্রতিনিধি/এমআর