বাঁধ নির্মাণের শ্রমিক যখন এমপি

প্রকাশ | ১৪ মে ২০১৭, ১৯:০৪

তানিম আহমেদ, ঢাকাটাইমস

সাতক্ষীরার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের পূর্ব দুর্গাবাটি এলাকায় খোলপেটুয়া নদী ভাঙনের সমস্যা আছে। ভাঙন রোধে সেখানে নির্মিত হচ্ছে বাঁধ। আর এই নির্মাণ কাজ তদারকি করতে গিয়েছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার। আর বাঁধ নির্মাণ দেখতে গিয়ে তিনি নিজেও নেমে পড়লেন টুকরি নিয়ে। মাটি তুলে মাথায় করে নিয়ে ফেললেন নদীর তীরে। যেন পুরদস্তুর একজন শ্রমিক।

ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায়। রবিবার সকালে সংসদ সদস্য জগলুল এভাবে শ্রমিক হয়ে কাজ করেছেন পুরো এক ঘণ্টা। এ সময় তিনি পোশাক হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন লুঙ্গি, আর স্যান্ডো গেঞ্জি। কোমড়ে বাধা ছিল গামছা। মাথায়ও কায়দা করে বাঁধা গামছাটির ওপরেই তোলা হয় মাটির টুকরি।

অন্য শ্রমিকদের মতই সংসদ সদস্যও দূর থেকে মাটি নিয়ে এসে ফেলছেন বাঁধে-এই দৃশ্য দেখে অন্যরা হতভম্ভ হলেও হতে পারেন। স্থানীয়রা এখন আর এই দৃশ্য দেখে আগের মত অবাক হয় না। কারণ, সংসদ সদস্য জগলুল এটা প্রথমবারের মত করেননি। এর আগেও একাধিকবার একই কাজ করেছেন তিনি। শ্রমিকের মতই মিশেছেন সাধারণের মত, কাজ করেছেন তাদের জন্য।  

সংসদ সদস্য জগলুলের এই মাটি বয়ে নিয়ে বাঁধে ফেলার ছবি এরই মধ্যে ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আর এই ছবির নিচে সাধারণ মানুষ তাঁর এমন কাজের জন্য প্রশংসা করছেন।

সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আজকে (রবিবার) সকাল আমি আমি আমার নির্বাচনী এলাকার নদীর ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়েছিলাম। সেখানে আমি একঘণ্টা শ্রমিকদের সাথে কাজ করেছি।’

জগলুল বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকাটি আইলা দুর্গত, সুন্দরবন পাশ ঘেরা, বঙ্গোপসাগরের পাশে। বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্ন হয়। যখনই সেখানে ভাঙ্ন দেখা দেয়, তখনই আমি ছুটে যাই। শ্রমিকদের সাথে লুঙ্গি পরে কাজ করি। এতে করে শ্রমিকরাও কাজে উদ্বুদ্ধ হয় এবং তাদের কাজে আগ্রহ বাড়ে।

এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিদের জনসম্পৃক্ত হয়ে উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণে আগ্রহ তৈরি করার জন্যই আমি এ কাজ করছি। এতে জনগণের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। আমার দেখাদেখি অনেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও এমন কাজ করছে।’

জগলুল হায়দার বলেন, ‘আমি এখনও লুঙ্গি পরে এবং ফতুয়া গায়ে দিয়ে গ্রাম এলাকায় যাচ্ছি। সেখানে আমি সাধারণ জনগণের সাথে কথা বলবো।’

শ্যামনগরের সংসদ সদস্য বলেন, ‘একজন এমপি শুধু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ, গাড়ি-বাড়িতে থাকার জন্য নয়। তাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য সাধারণ মানুষের সাথে কাজ করতে হবে।’

ঢাকাটাইমস/১৪মে/টিএ/ডব্লিউবি