খুনের দায়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির ২২ কর্মীর ফাঁসি

প্রকাশ | ১৭ মে ২০১৭, ১২:৪৪ | আপডেট: ১৭ মে ২০১৭, ১৬:৫০

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

২০০২ সালে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে আওয়ামী লীগের চার কর্মী হত্যা মামলায় ২৩ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে একটি আদালত। এদের মধ্যে ২২ জন বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। আর প্রধান আসামি আবুল বাশার কাশু মামলা চলাকালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।

বুধবার বেলা ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক কামরুন্নাহার এই রায় ঘোষণা করেন। ১৯ আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করা হয়। এই মামলার বাকি চার আসামি পলাতক। এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে আসামিদের জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে হাজির করা হয়।

রাষ্টপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর জাসমিন আহমেদ জানান, ২০০২ সালের ১২ মার্চ সকাল সাড়ে আটটায় বিএনপি সরকারের আমলে আড়াইহাজার উপজেলার জালাকান্দি এলাকার বাড়ি থেকে বাবেক ও তার ফুফাতো ভাই বাদল, ওমর ফারুক ও কবীরকে তৎকালীন আড়াইহাজার থানা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল বাশার কাশু ও সাধারণ সম্পাদক জহির মেম্বারের নেতৃত্বে বাড়ি থেকে ডেকে নেন। পরে লক্ষীবরদী গ্রামে নিয়ে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতরা সবাই ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থক।

এই ঘটনায় নিহত বাবেকের বাবা আজগর আলী মেম্বার বাদী হয়ে তৎকালীন আড়াইহাজার বিএনপির সভাপতি আবুল বাশারকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শেষে ২০০২ সালে ২১ জনকে সাক্ষী করে ২৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালত অভিযোগপত্র দাখিল করে।

এর মধ্যে প্রধান আসামি আবুল বাশার কাশু ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর হাতে সোনার কোটপিন তুলে দিয়ে ক্ষমতাসীন দলে যোগ দেন।

এই রায়কে যুগান্তকারী বলেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাসমিন আহমেদ।

নিহত বাবেকের ভাই আড়াইহাজার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিক রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর পর এই মামলার রায়ে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। এখন রায় দ্রুত কার্যকরে সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী এম এ রশিদ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘অপরাধ করে যে কেউ পার পায় না, এটা আবার প্রমাণিত হলো। এই রায় আইনের শাষণ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ 

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী খোরশেদ আলম মোল্লার অভিযোগ, রায়ে তারা ন্যায়বিচার পাননি। তিনি বলেন, ‘এই রায়ে আমার মক্কেল সংক্ষুব্ধ। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করি, উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচার পাব।’

দণ্ড পেলেন যারা

রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ১৯ আসামি হলেন: মামলার প্রধান আসামি আবুল বাশার কাশু, জহির উদ্দিন মেম্বার, আবু কালাম, ডালিম, ইয়াকুব আলী, রফিক, হালিম, রুহেল, শাহাবুদ্দিন, লিয়াকত আলী মাস্টার, সিরাজ উদ্দিন, ইদ্রিস আলী, মোহাম্মদ হোসেন, আহাদ আলী, ইউনুছ আলী, ফারুক হোসেন, গোলাম আযম, আব্দুল হাই ও খোকন।

এ মামলার পলাতক ও ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি হলেন: আমিন, রুহুল আমিন, তাজুল ইসলাম ও হারুন।