কোন সময় কী খাবেন এবং কী খাবেন না

প্রকাশ | ১৭ মে ২০১৭, ১৪:১৬ | আপডেট: ১৭ মে ২০১৭, ১৪:৪৯

তাজরিন জাহান তারিন, ঢাকাটাইমস

মন চাইলো তো একটা কলা খেয়ে নিলেন, কিংবা একটা আস্ত আপেল। কিংবা সময় কাটছে না, তাই বসে পড়লেন একটা চকলেট বার কিংবা এক ঠোঙা বাদাম নিয়ে। অথবা কমলার কোয়া পুরে দিলেন মুখে। না না, ওসব চলবে না। মানতে হবে খাওয়ার সময় আর নিয়ম কানুনও। ডাক্তাররা বলেন সব খাবার সব সময় খাওয়া যায় না, খাওয়া ঠিকও নয়। তাতে স্বাস্থের ভালোর চেয়ে মন্দই হয় বেশি।

তাই যখন তখন যেকোনো খাবার নয়। খেতে হবে সময় বুঝে।
 
১) ভাতঃ আমাদের দেশের প্রধান খাবার ভাত।শর্করার প্রধান উৎসও। কিছু আমিষও হয়েছে ভাতে তবে ভাত রাতে না খাওয়াই উত্তম।

দুপুরে

  • প্রচুর কার্বোহাইড্রেট সারাদিন শক্তি যোগায়।

রাতে

  • ওজন বৃদ্ধি করে

২) মাংসঃ আমিষের প্রধান উৎস মাংস।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি মাংস।মাংস খাওয়ার ভাল সময় দুপুর।

দুপুরে

  • অবসাদ দূর করে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

রাতে

৪-৫ ঘণ্টাব্যাপী হজম হয় যা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে বাঁধা দেয়।

৩)কলাঃ আমিষ, ভিটামিন এবং খনিজের অন্যতম একটি উপাদান হল কলা। কলাতে রয়েছে সহজে হজম যোগ্য শর্করা। এছাড়া এর পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ নিশ্চিত করে।কিন্তু সবসময় খাওয়া উচিত নয় কলা।

দুপুরে:

  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • ত্বক সুন্দর করে

রাতেঃ

  • ঠান্ডা জনিত সমস্যা, যেমন সর্দি বা কফ হতে পারে।

৪)টমেটোঃ ফল ও সবজি দু’নামেই পরিচিত টমেটো।রান্না বা কাচা উভয় ভাবেই খাওয়া যায়।তবে রান্না করে খেলে এর পুষ্টি গুণ কমে যায়।উপকারি হলেও রাতে খেলে এর থেকে পেটে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।

সকালে

  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
  • মেটাবলিজমে সাহায্য করে

রাতে

  • পেকটিন ও অক্সালিক এসিড নিঃসৃত হওয়ার ফলে পেট ফেঁপে যায়

৫)আলুঃ সারা বিশ্বেই আলু একটি অতি পরিচিত সবজি। রয়েছে শর্করা, আমিষ,ভিটামিন বি এবং সি, পটাসিয়াম ইত্যাদি।দেহের দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে আলু তবে রাতে আলু খাওয়া ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।

সকালে

  • কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে
  • মিনারেলের অভাব পূরণ করে

রাতে

  • প্রচুর ক্যালরি থাকার কারণে ওজন বৃদ্ধি পায়।

৬)চকলেটঃ সব বয়সের মানুষের পছন্দের খাবার চকলেট।কর্মশক্তি বৃদ্ধি করে, স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়, স্মৃতিশক্তি বাড়ায় চকলেট। তবে অসময়ে চকলেট ওজন বাড়িয়ে দেবে আপনার। 

সকালে

  • এন্টি অক্সিডেন্টের মাধ্যমে ত্বক সুন্দর রাখে
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

সন্ধ্যায়

  • ওজন বৃদ্ধি করে।

৭)দইঃ প্রায় ৪৫০০ বছর ধরে মানুষ দই খেয়ে আসছে।এটি প্রোটিন,ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি৬ এবং ভিটামিন১২ সমৃদ্ধ।

রাতে

  • খাবার হজমে সাহায্য করে

সকালেঃ

  • ফাঁকা পাকস্থলিতে প্রচুর পরিমানে এসিড তৈরি করে।

৮)বাদামঃ ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, প্রোটিনে ভরা বাদাম।ত্বক ভাল রাখে এবং রক্তে কোলেস্টেরল কমায় বাদাম। তবে অসময়ে বাদাম খাওয়া ওজন বৃদ্ধির জন্যও দায়ী হতে পারে।

দুপুরে

  • উচ্চ রক্তচাপ কমায়
  • হার্ট সুস্থ রাখে

রাতেঃ

  • প্রচুর পরিমানে ফ্যাট ও ক্যালরি থাকায় ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।

৯) কমলাঃ বিটা ক্যারোটিন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল কমলা। এর রসে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম।ওজন কমানো, ত্বকের পুষ্টি এমনকি দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে কমলা। অনেকেই সকালে উঠে একগ্লাস কমলার জুস খেয়ে ফেলেন, কিন্তু সেটা ঠিক না। সকালের চেয়ে সন্ধ্যায় কমলা খাওয়া উত্তম।

 সকালে

  • খালি পেটে খেলে পাকস্থলিতে গ্যাস তৈরি হয়।

সন্ধ্যায়

  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
  • বিপাক প্রক্রিয়াকে উন্নত করে

১০)আপেলঃ আপেল সম্পর্কে একটি প্রবাদ প্রচলিত রয়েছে ‘দিনে একটি আপেল খান, রোগ মুক্ত জীবন পান’।আপেলের গুণাগুণ আর বলার অপেক্ষা রাখেনা কিন্তু সকালে খাওয়া ভালো হলেও রাতে মোটেই নয়।

সকালে

  • রক্ত থেকে সুগার ও কোলেস্টেরলের পরিমান কমাতে সাহায্য করে।

রাতে

  • হজম হতে সময় নেয়
  • পাকস্থলিতে এসিডের পরিমান বৃদ্ধি করে

ঢাকাটাইমস/১৭মে/টিজেটি/কেএস