নরসিংদীর ‘জঙ্গি আস্তানা’র পাঁচ তরুণের ‘আত্মসমর্পণ’

প্রকাশ | ২১ মে ২০১৭, ১১:১৯ | আপডেট: ২১ মে ২০১৭, ১২:৫৬

নরসিংদী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নরসিংদীতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে যে বাড়িটি ঘেরাও করেছিল পুলিশ, সেটিতে অবস্থানরত পাঁচ তরুণ স্বেচ্ছা ধরা দিয়েছে। এরপর তাদেরকে র‌্যাব-১১ এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।

শুক্রবার বিকালে র‌্যাব নরসিংদীর গাবতলীর চিনিসপুর ইউনিয়নের উত্তর গাবতলী গোরস্থানের উত্তর পাশের একতলা একটি বাড়ি জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘেরাও করে বাহিনীটি। রাতে আর অভিযান চালানো হয়নি সেখান।

বাড়িটি ঘেরাও করার পর র‌্যাব জানিয়েছিল, সিলেটের আলোচিত জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহল থেকে সন্দেহভাজন কয়েকজন জঙ্গি পালিয়ে এসে এই বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিল। বাড়িটিতে পাঁচ তরুণের অবস্থানের কথাও জানিয়েছিল র‌্যাব।

রাতেই ভেতরে আটক তরুণদের স্বজনরা ঘটনাস্থলে এসে দাবি করেন, এই তরুণরা জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত নন। পরে রাতে আর বাড়িটিতে অভিযান চালানো হয়নি।

শনিবার সকাল নয়টার দিকে ভেতরে অবস্থানকারী তরুণদের সঙ্গে কথা হয়। এ সময় তারা আত্মসমর্পণের ইচ্ছার কথা জানায় বলে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে বলেছেন র্যা ব কর্মকর্তা মুফতি মাহমুদ খান। এর কিছুক্ষণ পর বেলা পৌনে ১১টার দিকে তরুণদেরকে বের করে নিয়ে আসা হয়।

পাঁচ তরুণকে বের করে আনার মধ্য দিয়েই শ্বাষরুদ্ধকর ১৯ ঘন্টার এ অভিযানটি শেষ হয়। কোন ধরনের রক্তপাত ছাড়াই এই অভিযান শেষ হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে এলাকাবাসী।

অভিযান শেষে বেলা এগারোটায় দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মুফতি মাহমুদ খান। তিনি বলেন, ‘শনিবার রাত ১০ টার দিকে ওই বাড়িতে জঙ্গি সন্দেহে আটক থাকা লোকদের স্বজনরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমরা সহযোগিতা চাইলে তারাও আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। আমরা তাদের সহযোগিতা নিয়েই আজ সকাল ৯ টা ২৫ মিনিটে তাদেরকে আত্মসমর্পণের কথা বলি। এতে তারা সম্মতি দিলে আমরা একে একে পাঁচ জনকে বের করে নিয়ে এসেছি এবং আমাদের হেফাজতে নিয়েছি।’

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাদের আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে গিয়েছি। তাদের সঙ্গে কথা বলার পর তারা আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়।’

মুফতি মাহমুদ খান আরো জানান, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই তারা বাড়িটি ঘিরে রেখেছিল। তাদের কাছে তথ্য ছিল আতিয়া মহলের জঙ্গিদের সঙ্গে এ বাড়িতে বসবাসকারীদের যোগসাজস রয়েছে। যারা এখানে থাকার কথা তাদের অনেকেই নেই। আবার যারা আছে তাদের অনেকেই নতুন এসেছে। আটককৃতদের সঙ্গে জঙ্গিদের কোনো যোগাযোগ আছে কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ’

আটকদের পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি মুফতি মাহমুদ খান। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে তাদের সঠিক পরিচয় বলা সম্ভব নয়। আমরা পাঁচ জনের নাম পেয়েছি, অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে।’

বাড়ি মালিকের বরাত দিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, চলতি মাসের ৩ তারিখ বাসাটি ভাড়া নেয়া হয়েছিল। তবে যারা ভাড়া নিয়েছিল তারা ছাড়াও আরও কয়েকজন এই বাসায় যাতায়াত করতো। তিনি বলেন, ‘তারা ভাড়া নেয়ার সময় কিছু কাগজপত্র দিয়েছিল। বলেছিল ৪-৫ জন থাকবে। কারা কারা থাকবে তাও সুনির্দিষ্ট করে বলেছিল কারা থাকবে। কিন্তু তারা যখন আত্মসমর্পণ করেছে তখন দেখলাম আরও কিছু নতুন ফেস এখানে যুক্ত হয়েছে।’

ঢাকাটাইমস/২১মে/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি