নাটোরে বৈশাখী মেলার নামে জুয়া ও অশ্লীল নৃত্য

প্রকাশ | ২৩ মে ২০১৭, ১৩:১১

নাটোর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া বাইপাস মোড়ে বৈশাখী মেলার নামে প্রতিরাতেই প্রদর্শন করা হচ্ছে অশ্লীল নৃত্য, চলছে জুয়া খেলা। এলাকাবাসী অভিযোগ, গত ১০ দিন ধরে সেখানে প্রকাশ্যে জুয়া খেলা হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

অপরদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ, মেলার আয়োজকরা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। জুয়ার টাকা যোগাড় করতে গিয়ে অনেকেই অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন। এলাকায় বাড়ছে চুরি ছিনতাইসহ নানারকম অসামাজিক কার্যকলাপ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নামে বনপাড়া বাইপাসে আয়োজন করা হয়েছে আনন্দ মেলার। সকাল থেকে মাইকে জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রচার চালানো হচ্ছে হাউজি ও সার্কাসের। কিন্তু রাতে সেখানে অবাধে চলছে হাউজিসহ ডাব্বু, ফর, চরকিসহ নানা ধরনের জুয়া খেলা। এই খেলায় অংশগ্রহণ করতে গিয়ে অনেকেই হয়ে পড়েছেন নিঃস্ব।

সরেজমিনে বনপাড়া বাইপাস মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, বাইপাস মোড়ের পূর্ব পাশে খোলা আকাশের নিচে ফাঁকা জমি টিন দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে। সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে সার্কাস ও হাউজি খেলার প্যান্ডেল। এছাড়া বাঁশের বেড়া দিয়ে আলাদাভাবে ব্যবস্থা করা হয়েছে  ডাব্বু ফর চড়কিসহ নানা ধরনের জুয়া খেলার। ভিড় করে কেউ খেলেছেন কেউ দেখছেন। অপরদিকে সার্কাসের নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য।

স্থানীয় লোকজন জানালেন, রাত গভীর হলে সার্কাস প্যান্ডেলের চেহারা পাল্টে যায়। সেখানে এমন অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করা হয় যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী ঢাকাটাইমসকে জানান, ৮/১০ দিন ধরে বনপাড়া বাইপাসে মাইকিং করে নানা ধরনের জুয়া খেলা চলছে। এসব জুয়া খেলে অনেকেই সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে অশ্লীল নৃত্য চলায় আমাদের যুব সমাজ বিপথগামী হচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট  প্রশাসনকে জানানো হলেও অজ্ঞাত কারণে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ তার।

বনপাড়া পৌরসভার মেয়র কেএম জাকির হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা জেনেছি হাইকোর্টের নির্দেশনা নিয়ে এসে এখানে হাউজি ও সার্কাস চলছে। তবে কোনো জুয়া খেলার কথা আমার জানা নেই।’

অপরদিকে বড়াইগ্রাম উপজেলা কমান্ডের কমান্ডার ছামসুল হক ঢাকাটাইমসকে জানান, দুস্থ, অসহায় ও পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণার্থে প্রতিদিন পাঁচ হাজার টাকা ভাড়ায় ফারুক আহমেদরে সাথে চুক্তি হয়েছে। সে অনুযায়ী তারা বৈশাখী মেলা চালাচ্ছেন। 

নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন ঢাকাটাইমসকে জানান, তিনি মেলা চলার কোনো অনুমোদন দেননি। মেলার আয়োজকরা কোনো আবেদন করেননি। তবে হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী এবং একেএম জহিরুল ইসলামের আদালতের রুল নিশি বলে সবধরনের ইনডোর গেমস এর অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বিষয়টির আইনগত দিক বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ডিসি।

 নাটোরের পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকদার  ঢাকাটাইমসকে জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকায় পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। তবে অল্প দিনেই এটি বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৩মে/প্রতিনিধি/জেবি)