ষোড়শ সংশোধনী আইনবহির্ভূত: টি এইচ খান

প্রকাশ | ২৫ মে ২০১৭, ১৮:১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে নেয়া ষোড়শ সংশোধনীকে অকার‌্যকর ও আইনবহির্ভূত (ভয়েডস অ্যান্ড আল্ট্রা ভাইরাল) বলে মন্তব্য করেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী টি এইচ খান। তিনি বলেছেন, এটা বাতিল করে দেওয়াই শ্রেয়।

ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল শুনানিতে বৃহস্পতিবার অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে এ মত দেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ শুনানি চলছে। বৃহস্পতিবার সপ্তম দিনের শুনানি হয়েছে। আগামী রবিবার আবারও শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। 

টি এইচ খানের পক্ষে আদালতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন তার ছেলে ফজলুল এইচ খান। আদালতে বক্তব্যের বিষয়ে পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার পক্ষে উনি সাবমিশন দিয়েছেন। ওই রায়ে বলা হয়েছে, ১৬তম সংশোধনী সংবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। ওই রায়ের সমর্থনে হাইলি কিছু বিশ্লেষণ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

ফজলুল এইচ খান বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী যে সংসদে পাস করা হয়েছে, সেই সংসদ যেভাবে নির্বাচিত হয়েছে, সে নির্বাচনটাই বৈধ না। হাইকোর্টের রায়কে সমর্থন করে ষোড়শ সংশোধনী বিষয়ে আমরা বলেছি, এটা ভয়েড এবং আল্ট্রা ভাইরাল। এটাকে বাতিল করে দেওয়াই শ্রেয়। এটা যেভাবে হয়েছে সে দিকগুলো আমরা তুলে ধরেছি। এর অন্তর্নিহিত কিছু বিষয় আছে তার পরিণতি কী হতে পারে, ভবিষ্যতে কী হতে পারে, বর্তমানে কী হতে পারে তার একটি ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আর বলেছি, ত্রয়োদশ সংশোধনীর বিষয়টি সেটেলড না করে ষোড়শ সংশোধনী আলোচনা ঠিক না। এটাকে প্রাসঙ্গিকভাবে দেখতে হবে।’

তিনি বলেন, সরকার বলে আসছে, ত্রয়োদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানটি তারা বাতিল করেনি, করেছে আদালত। সে প্রশ্নটা আজ আদালতকে করা হয়েছিল যে, ত্রয়োদশ সংশোধনী আসলেই আদালত বাতিল করেছিল কি না।

ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেয়া হয়েছিল ষোলো মাস পর-এ কথা উল্লেখ করে ফজলুল এইচ খান বলেন, ‘তখন তার (সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক) শপথ ছিল না। অবসরে যাওয়ার ১৬ মাস আগে তিনি যখন শর্ট অর্ডার দিয়েছিলেন, সেখানে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দশম ও একাদশ নির্বাচন হওয়া উচিত বলেছিলেন। কিন্তু সেটা পরে মূল রায়ে থাকেনি।’

ফজলুল এইচ খান বলেন, ‘আমরা আদালতে বলেছি, ওই রায়ের কোনো বৈধতা নেই। কারণ ওই রায়টা যখন দিয়েছেন, তখন তিনি (এ বি এম খায়রুল হক) বিচারক ছিলেন না। বিচারক হিসেবে তিনি রায় দেননি। ওই রায়ে যে দুজন বিচারপতি স্বাক্ষর করেছেন তারাও এ কাজটি ঠিক করেননি এবং ওই স্বাক্ষরটাও গ্রহণযোগ্য না।’

তিনি বলেন, ‘পঞ্চদশ সংশোধনী যেদিন পাস হয়েছে, তার পরেই কিন্তু রায় পাবলিশ হয়েছে। রায় প্রকাশের আগেই সরকার পঞ্চদশ সংশোধনী সংসদে পাস করেছে। অথচ সরকার বলেছে, এটা আদালত বাতিল করেছে, তারা করেনি।’

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে শক্তিশালী করার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি। বলেন, দেশের উচ্চ আদালতসহ বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চাইলে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে এখানে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল আরও শক্তিশালী করতে হবে। একটা নমিনাল বডি না করে সেখানে একটা ফাংশনাল বডি করে আরও ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়া উচিত।

(ঢাকাটাইমস/২৫মে/এমএবি/মোআ)