মানিকগঞ্জ-১: আ.লীগ-বিএনপির দুই রকম গণসংযোগ

প্রকাশ | ২৮ মে ২০১৭, ০৯:০৮

মঞ্জুর রহমান, মানিকগঞ্জ

আরো বছর দেড়েক বাকি থাকলেও আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মানিকগঞ্জের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির নেতারা ইতিমধ্যে মাঠে নেমে গেছেন।

সভা-সমাবেশ আর জনসংযোগের মধ্য দিয়ে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা  করছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদসহ সম্ভাব্য প্রার্থীরা। অন্যদিকে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের হামলার ভয়ে প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশ করতে না পারলেও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ঘরোয়া কর্মসূচির মাধ্যমে জনসংযোগ করছেন।

এমনিতে আগামী নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনো তেমন আলোচনা চোখে পড়ে না। তবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সভা কিংবা ঘরোয়া আলোচনা কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিভিন্ন আড্ডা ও আলোচনায় নির্বাচনের বিষয়টি উঠে আসে।

মানিকগঞ্জের তিনটি আসনের নির্বাচনী হালচাল সম্পর্কে আজ প্রথম পর্ব মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর-দৌলতপুর ও শিবালয়) আসন নিয়ে।
আ.লীগে ছয়জন

এই আসনে বর্তমান সাংসদ আওয়ামী লীগের এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়। আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেতে এই সাবেক ক্রিকেটারসহ অন্তত ছয়জন চেষ্টা চালাবেন বলে জানা যাচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নাঈমুর রহমান দুর্জয় এবং কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম জাহিদ পাল্লা দিয়ে গণসংযোগে চালিয়ে যাচ্ছেন। সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিন এই দুই প্রার্থী ঘিওর-দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলার কোনো না কোনো স্থানে সভা-সমাবেশ করে সরকারের আট বছরের উন্নয়ন সাফল্য তুলে ধরছেন।

এই আসন থেকে নির্বাচনে আগ্রহী আওয়ামী লীগের অন্য যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের কাউকে মাঠের কর্মসূচিতে এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য ওই প্রার্থীরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ারুল হক, জেলা বিএনপির অর্থবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহিম খান, আওয়ামী লীগ নেতা ও শিবালয় উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আকবর।

বিএনপিতে তিনজন

এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তিনজনের নাম শোনা যাচ্ছে। পুলিশ ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের হামলার ভয়ে প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশ করতে না পারলেও তিনজনই কমবেশি ভেতরে ভেতরে জনসংযোগ করে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে এগিয়ে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নিবাহী সদস্য এস এ জিন্নাহ কবীর ও বিএনপির সাবেক মহাসচিব অ্যাডভোকেট খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু। অন্যজন খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে জেলা বিএনপির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ড. খন্দকার আকবর হোসাইন বাবলুও খুব একটা পিছিয়ে নেই। দলের মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করে যাচ্ছেন তিনি।

দুই দলের নেতারাই আশাবাদী

দুই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা আশাবাদী, তারা নির্বাচনে জয়ী হবেন। আওয়ামী লীগের নেতারা দাবি করেন, তারা যে উন্নয়ন করেছেন, তাতে জনগণ তাদের আবার ভোট দেবেন। আর বিএনপির নেতাদের দাবি, সরকারের জুলুম-নির্যাতনের জবাব জনগণ আগামী নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে দেবে।  

মানিকগঞ্জ-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয় বলেন, ‘দীর্ঘদিনের অবহেলিত এই আসনে গত সাড়ে তিন বছরে আমি যে উন্নয়ন করেছি তা স্বাধীনতার পর আর কেউ করতে পারেনি।’ তিনি আশা করেন, এই আসন থেকে দল তাকে আবার মনোনয়ন দিলে তিনি নির্বাচিত হতে পারবেন। তবে দলের যেকোনো সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নেবেন জানিয়ে নাঈমুর বলেন, অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলেও তার পক্ষে কাজ করবেন তিনি।

পুলিশ ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের হামলায় গত আট বছর ধরে প্রকাশ্যে কোনো সভা-সমাবেশ করতে পারেননি অভিযোগ করে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য এস এ জিন্নাহ কবীর বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে সপ্তাহে প্রায় তিন দিন নেতাকর্মীদের নিয়ে ঘরোয়া কর্মসূচি পালন করছি।’ তিনি বলেন, পুলিশ ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের জুলুম ও নির্যাতনের জবাব আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে দেওয়া হবে।  

(ঢাকাটাইমস/২৭মে/মোআ)