মানিকগঞ্জ-৩: চিন্তামুক্ত আ.লীগ, দ্বন্দ্বে বিএনপি

প্রকাশ | ৩০ মে ২০১৭, ০৮:২৫ | আপডেট: ৩০ মে ২০১৭, ০৯:১১

মঞ্জুর রহমান, মানিকগঞ্জ

আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মানিকগঞ্জ সদর আসনে তিন জনের নাম আসলেও এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগে একজনই সক্রিয়। তিনি হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন। বিএনপি এখন পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুষ্পষ্ট ঘোষণা না দিলেও নেতা-কর্মীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে তারা দুশ্চিন্তায় দলের ভেতরে কোন্দল নিয়ে।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আগেভাগেই নেমে গেছেন মাঠে। জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাকর্মীদের নিয়ে সদর ও সাটুরিয়া উপজেলায় নিয়মিত সভা, সমাবেশ করে সরকারের গত আট বছরের উন্নয়ন সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।

এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রকাশ্যে কোন্দল লেগেই আছে। জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার বিপক্ষে রয়েছে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম খান শান্তসহ জেলা প্রায় অর্ধেক জ্যেষ্ঠ নেতা। গত আট বছরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রিতা মাঠে না থেকে ঢাকায় নিজের ব্যবসা নিয়ে বেশি ব্যস্ত ছিলেন বলে তার বিরোধীদেও অভিযোগ।

জেলা বিএনপির কোন্দল এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, গত ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির ১৬ সদস্যেও কমিটি কেন্দ্র থেকে গঠন করে দিলে সেই কমিটি আজ পযন্ত নিজ কার্যালয়ে বৈঠক করতে পারেনি। এই অবস্থায় জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতাকে মনোনয়ন দিলে তিনি দলের নেতা-কর্মীদের কতটা একাট্টা করতে পারবেন, সে নিয়ে আশঙ্কার কথা বলছেন দলের কর্মীরাই।

দলের ভেতর রিতার বিরোধিতাকে সামনে রেখে ঘরোয়া কর্মসুচিতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন সদর উপজেলার দুইবারের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। বিএনপির কর্মীদের ভাষ্যমতে, মানিকগঞ্জ-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য জাহিদ মালেক স্বপনের সাথে লাড়াই করে বিজয় ছিনিয়ে আনার মত নেতা হতে পারেন আতা।

আগামী সংসদ নির্বাচন বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন গ্রুপিং নেই। দলকে সুসংগঠিত করতে প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন সদর উপজেলায় নিজের নির্বাচনী এলাকায় এসে সকলকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়ন মূলক কাজের উদ্বোধন করে আটবছরের উন্নয়ন সাধারন মানুষের সামনে তুলে ধরছি। আশা করছি আগামী নির্বাচনে জনগণ এর মূল্যায়ন করবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা মানিকগঞ্জেও ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। মেডিকেল কলেজ থেকে শুরু করে এমন কোন কাজ নেই যা এখানে হয়নি।’

স্বপন ছাড়াও মানিকগঞ্জ আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক বাদরুল ইসলাম খান বাবলু ও রাবেয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা রফিকুল ইসলাম প্রার্থী হতে আগ্রহী বলে দলের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে তাদের পক্ষে তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়ে না।

বিএনপি নেতা আতাউর রহমান আতা বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের হাতে নেতৃত্ব না থাকার কারণে আজ মানিকগঞ্জ বিএনপির এই দশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের অফিসের কর্মচারী দিয়ে জেলার রাজনৈতিক চালিয়ে নিতে চান। অফিসের কর্মচারীরা যেভাবে বলেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সেইভাবে চলার কারণে জেলা বিএনপির আজ হুমকিতে পড়েছে।

আতা বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এবং বিএনপি যোগ্য নেতাকে প্রার্থী করণে এর ফল পাবে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ও তৃণমুলের নেতাকর্মীরা বিএনপির জন্য উন্মখ হয়ে আছেন। আওয়ামী লীগের কর্মকা-ে উপর বিমুখ হয়ে বিএনপির জন্য সাধারণ মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে।

এই আসনে বিএনপির আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি। পরে তার ব্যক্তিগত সহকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম এ বিষয়ে কথা বলবেন না।’

ঢাকাটাইমস/৩০মে/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি