‘মোরা’য় সর্বাধিক ক্ষতি টেকনাফে

প্রকাশ | ৩০ মে ২০১৭, ২১:০২

আবদুর রহমান, টেকনাফ (কক্সবাজার) থেকে

ঘূর্ণিঝড় 'মোরা'র আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফে। এখানে সাড়ে চার হাজার ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে নারী শিশুসহ ৩৫ জন আহত হয়েছেন। গোটা উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ঘরহারা হয়েছে।

সোমবার রাত ২টার দিকে বাতাস শুরু হয়। মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড় মোরা টেকনাফে আঘাত হানে। সর্বপ্রথম সেন্টমার্টিন দ্বীপে এর প্রভাব পড়ে।

স্থানীয় সূত্র মতে, মঙ্গবার ভোর-সকালে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে টেকনাফ উপজেলা লণ্ডভণ্ড হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, বাহারছড়া, সাবরাং ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্য এলাকাও প্রচুর ঘরবাড়ি, পানের বরজ, ক্ষেত খামার, চিংড়ি, বিদ্যুতের খুঁটি, মাছের ঘের ও প্রচুর গাছপালা ভেঙে রাস্তায় নেমে গেছে। এমনকি ১৯৯১ ও ১৯৯৪ সালে ঘুর্ণিঝড়কে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ হার মানিয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেকে। তাদের বক্তব্য এই রকম বাতাস ও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি সে সময় টেকনাফে হয়নি।

ঘূর্ণিঝড়ে আহতরা হলেন সাব্বির হাসান, মো. রফিক, মো. আরমান, সাবান হোসেন, শামসু আলম, নূর কলিমা, সাঞ্জিদা আকতার, রাজিয়া আকতার ও নূর জাহান, কামাল হোসেন, নুরু মোহাম্মদ জামাল, শিশুরা হলো জিহান, রাখিব হোসেন, নুর হাকিম, সাইফুল ইসলাম, মো. জিয়া, আবুল হোসেন, দিল মোহাম্মদসহ অনেক।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক শোভন দাস ঢাকাটাইমসকে জানান, ঘূর্ণিঝড়ে গাছ পড়ে এবং উড়ে আসা টিনের চালের আঘাতে তারা হন। এর মধ্যে আহত দুজন আবু তাহের ও আব্দুর মালেক  উন্নত চিকিৎসা জন্য কক্সবাজার পাঠানো হয়েছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর আহমেদ ঢাকাটাইমসকে জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে আমাদের এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দ্বীপের প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন এবং ৮০০ ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, মঙ্গলবার ভোরে হঠাৎ বৃষ্টি বাতাস শুরু হয়। একটু পর দ্বীপে ঘূর্ণিঝড়ে আঘাত হানে। দ্বীপে আট শতাধিক ঘর-বাড়ি ভেঙে গেছে। এতে সাড়ে ছয় হাজার লোক ঘরহারা হয়ে গেছে।   

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ হোসেন সিদ্দিক ঢাকাটাইমসকে জানান, মোরার আঘাতে টেকনাফ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে সাড়ে চার হাজার ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর রয়েছে। এই ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়তে পারে।

নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, সবচেয়ে বেশি সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, বাহারছড়া, সদর ও টেকনাফ পৌরসভায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা থেকে প্রাথমিকভাবে সাড়ে ১৩ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দিয়েছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, মোরা ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার বেগে টেকনাফে ও ১১৪ কিলোমিটার বেগে সেন্টমার্টিনে আঘাত করে। এছাড়া কক্সবাজারে ১১৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে।

(ঢাকাটাইমস/৩০মে/প্রতিনিধি/জেবি)