চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার ‘ব্যানানা আম’

প্রকাশ | ০১ জুন ২০১৭, ১১:৪৮ | আপডেট: ০১ জুন ২০১৭, ১১:৫৩

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

আম চাষের জন্য সারাদেশে সুনাম কুড়িয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম। এখানে চাষ করা গোপালভোগ, হিমসাগর, খিরসাপাত, লক্ষণভোগ, আম্রপালি, ফজলি, আশ্বিনাসহ নানা জাতের আম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রপ্তানি করা হয় বিদেশেও। এবার এই তালিকায় যুক্ত হলো নতুন ‘ব্যানানা’ জাতের আম।

থাইল্যান্ড থেকে আসা আমটি দেখতে অনেকটা কলার মতো। এই আমটি স্বাদে, গন্ধে যেমন অনন্য, তেমনি এর চাষ পদ্ধতিও অত্যন্ত সহজ।  দূর থেকে দেখে মনে হবে আমগাছে সাগর কলা ঝুলছে। আর পাকার পর এটি দেখতে সাগর কলার মতোই মনে হয়। কলার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে অনেকের দৃষ্টি কাড়ে। চাঁপাইয়ের বিভিন্ন আমচাষিদের বাগানে এখন ব্যানানা ম্যাঙ্গো শোভা পাচ্ছে। আর এই আম দেখার জন্য অনেকেই গাছের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে।

আমটি দেখতে যেমন বাহারি তেমনি সুমিষ্ট। পাতলা খোসা। প্রতিবছরই আম ধরে। ফলন ভালো ও বাজারে আমটির চাহিদা ব্যাপক হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে বাগানের সংখ্যা। বিদেশে রপ্তানিযোগ্য নাবী জাতের এই আমের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা নিয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করলেন গবেষকরা।

জানা গেছে, এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে শত শত জাতের আমের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘ব্যানানা আম।’ একেকটি আমের ওজন সাড়ে তিনশ থেকে সাড়ে চারশ গ্রাম। এছাড়া চাষ পদ্ধতি সহজ হওয়ায় ইতোমধ্যে চাষিদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এই জাতের আমটি। বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকায় দিন দিন বাড়ছে বাগানের সংখ্যা।

আমচাষী দুরুল হোদা বলেন, আমটি সুস্বাদু হওয়ায় তিনি হর্টিকালচার সেন্টার থেকে এর চারা সংগ্রহ করে পাঁচ বিঘা জমিতে লাগান। ফজলি আম শেষ হওয়ার সময় ভাল জাতের আম না থাকায় নতুন এই জাতের ব্যানানা আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যান প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ২০১০ সালে থাইল্যান্ড থেকে এই জাতের ডগা নিয়ে এসে প্রথমে গ্রাফটিং করা হয়। পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের গবেষকরা দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য গবেষণা শুরু করেন। তিন বছর গবেষণা করার পর আসে সফলতা। এরপর প্রতিবছর নিয়মিত আম আসায় ২০১৫ সালে বাণিজ্যিকভাবে কৃষকের মাঝে এই আমের সম্প্রসারণ কাজ শুরু হয়। এ জাতের আমের চারা হর্টিকালচার সেন্টারের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক ড. সাইফুর রহমান বলেন, সাধারণত জুন মাসের পর থেকে দেশের বাজারে ভালো জাতের আমের প্রাপ্যতা যখন কমে আসে, তখন বাজারে আসে এই জাতের আম। স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় ও বিদেশে রপ্তানিযোগ্য এই আম চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে সফল হবেন চাষিরা। এ বছর ৫০ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদ শুরু করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিদেশে রপ্তানিযোগ্য নাবী জাতের এই আমের চাহিদা ও বাজার মূল্য পাবার আশায় বাণিজ্যিকভাবে এই আমের চাষ নিয়েও অত্যন্ত আশাবাদী।

ঢাকাটাইমস/১জুন/প্রতিনিধি/এমআর