রোজাদারের করণীয়-বর্জনীয়

প্রকাশ | ০২ জুন ২০১৭, ১৫:৪১

ইসলাম ডেস্ক

রোজা এমন একটি ইবাদত যা মানুষকে আল্লাহর প্রিয় করে। রোজাদারের সবকিছুই আল্লাহর কাছে প্রিয়। এমনকি তাদের মুখের দুর্গন্ধও আল্লাহর কাছে অপ্রিয় মনে হয় না; বরং উন্নতমানের সুগন্ধির চেয়েও তা আল্লাহর কাছে প্রিয়। তবে রোজার দ্বারা আল্লাহর সান্নিধ্য ও কৃপা তখনই লাভ করা সম্ভব যখন রোজা হবে নিখাঁত। একমাত্র আল্লাহর জন্য নিবেদিত রোজাই পারে বান্দাকে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করে দিতে। যথাযথ পুরস্কারের আশা করলে রোজাদারকে সবসময় আল্লাহর নির্দেশনার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শরিয়তের বিধি-নিষেধ পুঙ্কানুপুঙ্খ মেনে চলতে হবে প্রতিটি ধাপে। প্রকৃত রোজাদারের সারাটি দিন ইবাদততুল্য। বাহ্যিকভাবে না হলেও অন্তত ধ্যান-ধারণায় ইবাদতের প্রতি মনোনিবেশ থাকতে হবে।

রোজাদারের সর্বপ্রথম দায়িত্ব হচ্ছে রোজার বাহ্যিক দাবিগুলো পূরণ করা। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে বিরত থাকা। পাশাপাশি প্রবৃত্তি ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের যাবতীয় অবৈধ কামনা-বাসনা থেকে বেঁচে থাকা। পেটকে যেমন খাদ্যচাহিদা পূরণ থেকে বিরত রাখবে তেমনি জিহ্বাকেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি মিথ্যা কথা বলা ও সে অনুযায়ী কাজ পরিত্যাগ না করে তবে তাকে শুধু খাদ্য ও পানীয় পরিত্যাগ করায় আল্ল¬াহর কোনো প্রয়োজন নেই।’

রোজাদারের আচরণ হবে মার্জিত। রোজা রাখলে ক্ষুধা ও পিপাসা পাওয়া স্বাভাবিক। এর প্রভাব যেন কোনোভাবেই আচরণে ফুটে না ওঠে। অযথা রাগারাগি ও বাজে আচরণ রোজার পবিত্রতা নষ্ট করে। এ কারণে রোজার প্রতিদান থেকে বঞ্চিত হওয়ারও আশঙ্কা আছে। রোজা রেখে আগ বাড়িয়ে ঝগড়া ফাসাদ কিংবা কোনো ঝামেলায় জড়িয়ে পড়বে না। কেউ রোজাদারের সঙ্গে আগ বাড়িয়ে ঝামেলা বাধাতে এলে সরাসরি তাকে জানিয়ে দেবে যে, ‘আমি রোজাদার, আপনার সঙ্গে বিবাদে জড়াতে চাই না।’

রোজার মাস এলে অনেকেই আয়ের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। অবৈধভাবে উপার্জন করতেও কুণ্ঠিত হন না। একজন রোজাদারে জন্য এটা খুবই জঘন্য কাজ। হারাম উপার্জন ও হারাম খাদ্যে রোজা রেখে কোনো ফায়দা আশা করা যায় না। যাদের উপার্জনের উৎস পুরোটাই হারাম তারা এ মাসে অন্য কোনো উৎস বা উপায় অবলম্বন করতে পারেন।

রোজার মাস মুমিনের জন্য ইবাদতের বসন্তকাল। রোজাদার নানামুখি ইবাদতের মাধ্যমে রমজানকে কাজে লাগাতে পারলে একটি রমজানই জীবনের সফলতা অর্জনের জন্য যথেষ্ট। আর কার জীবনে এটাই শেষ রোজা তা জানা নেই। রমজানে প্রতিটি ইবাদতের জন্যই ন্যূনতম সত্তর গুণ বেশি সওয়াবের ঘোষণা রয়েছে। রোজাদারের জন্য উচিত হলো বেশি বেশি নফল ইবাদতে মনোনিবেশন করা। বিশেষত কোরআন তেলাওয়াত, তাসবিহ-তাহলিল, দান-সদকা ইত্যাদি বেশি বেশি করা। গরিব-দুঃখীর পাশে দাঁড়ানোও রমজানের অন্যতম দাবি। যাদের সামর্থ্য আছে তাদের উচিত গরিব-দুঃখীদের পাশে দাঁড়ানো। অধীনস্থ লোকদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়াও রোজাদারের কর্তব্য। রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত রোজার ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। রোজা রেখে অহেতুক কাজে জড়ানো যাবে না। রোজা অবস্থায় কল্যাণকর কাজে ব্যস্ত থাকাই উত্তম।

(ঢাকাটাইমস/০২জুন/জেবি)