হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

প্রকাশ | ০৩ জুন ২০১৭, ১৮:১২

নিজস্ব প্রতিবেদক, দিনাজপুর
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রান, মানসিক নির্যাতন  ও অনৈতিক কাজে বাধ্য করার অভিযোগ  উঠেছে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।

ঘটনার সত্যতা পেয়ে রিপোর্ট পেশ করলেও আজ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গ্রহণ করেনি কোন ব্যবস্থা। ফলে ইংরেজি বিভাগের ওই শিক্ষক দীপক কুমার সরকার আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ভুক্তভোগী ছাত্রীরা জীবনের নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। পাশাপাশি এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ইংরেজি বিভাগের লেভেল-৩ এর ছাত্রীরা লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে উঠে এসেছে দীর্ঘদিন যাবত ওই শিক্ষক বিভিন্ন অযুহাতে ছাত্রীদের তার চেম্বারে ডেকে নিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। বাধ্য করে অনৈতিক কাজে। প্রতিবাদ করলে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে। কখনো মোবাইলে ম্যাসেস এর মাধ্যমে কুপ্রস্তাব দেয়। এসবে কাজে রাজি না হলে পরীক্ষায় ফেল করে দেয়া হবে বলে হুমকিও দেয়। অভিযোগকারীদের মধ্যে একজন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আমি তাকে খুশি করার জন্য অনৈতিক এবং অসৎ কাজ করব না। শিক্ষকের উত্তর ছিল কখনো কখনো ভালো কিছু পেতে হলে অনৈতিক এবং অসৎ কাজ করতে হয়।

এই শিক্ষক এধরনের ফাঁদ পেতে চার ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করছে। এ কাজের জন্য ওই শিক্ষক বাঁশের হাট এলাকায় রানীগঞ্জ মোড় হতে ১শ গজ দূরে সাঁওতালদের কবরস্থনের পাশে একটি ঘর ভাড়া নেন। সকলের আড়ালে এখানে শিক্ষক দীপক কুমার সরকার অনৈতিক কর্মকান্ডের আখড়া গড়ে তুলেন।  দিনের পর দিন এসব ঘটনা প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগীরা বিভাগীয় প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। ২০১৬ সালের ২২ ও ২৪  সেপ্টেম্বরে লিখিত অভিযোগের পর বিভাগীয় প্রধান ডিন ড. ফাহিমা খানম ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারকে  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠান।

অভিযোগ তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়  কর্তৃপক্ষ সোস্যাল সায়েন্স এন্ড হিউম্যানিটিস অনুষদের ডিন ড. ফাহিমা খানমকে চেয়ারম্যান এবং সহকারী প্রফেসর শফিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। এবং ৭ কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বলা হয়।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- প্রফেসর ড, বলরাম রায়, প্রফেসর ড, এটিএম শফিকুল ইসলাম, প্রফেসর ড, হারনুর রশিদ। তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত সম্পন্ন করে  বিশ্ববিদ্যালয়  কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন।

এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব সহকারী প্রফেসর শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয়গুলো সত্যতা পাওয়া গেছে বলে স্বীকার করেন।

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে শিক্ষক দীপক কুমার সরকার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিয়ে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্জ প্রফেসর ড. মু আবুল কাসেম এর সঙ্গে যোগাযাগ করা হলে তিনি জানান, আমার যোগদানের আগে ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি অবহিত হবার পর তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৩জুন/এসএএস)