ইফতারে চকবাজারের ‘দই বড়া’

প্রকাশ | ০৫ জুন ২০১৭, ১৩:৫৫ | আপডেট: ০৫ জুন ২০১৭, ১৪:৪৭

পরিতোষ আচার্য, ঢাকাটাইমস

পুরান ঢাকাবাসী ভোজনবিলাসী। রমজান মাস এলে তাদের ভোজনবিলাস খানিকটা বেড়ে যায়। বিশেষ করে চকবাজারে গেলে সত্যতা মেলে। কেননা, রমজান উপলক্ষ্যে এখানে বিশেষ বিশেষ মুখোরোচক খাবারের পসরা সাজানো হয়। এমনই একটি খাবার দই বড়া। ইফতারে দই বড়ার বিশেষ কদর রয়েছে। চকবাজারে দই বড়া প্রায় তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে বিক্রি হয়ে আসছে।

চক বাজারে ৩৭ বছর ধরে দই বড়া বিক্রি করছেন খোকন মিয়া। তিনি ঢাকাটাইমসে বলেন, আমি ৩৭ বছর ধরে চকবাজারে দই বড়া বিক্রি করছি।রোজার একটি মাস আমি অন্যসব কাজ বাদ দিয়ে শুধু ইফতারের জন্য এই দইবড়া বিক্রি করি।

দই বড়া তৈরির উপাদান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বড়া তৈরি হয় মাসকলাইয়ের ডাল, দারুচিনি গুড়া, এলাচ গুড়া, ধনিয়ার গুড়া, বিট লবণ, মরিচের গুড়া ও খাঁটি সরিষা তেল দিয়ে। আর দই তৈরি করা হয় খাঁটি দুধ থাকে।’

দই বড়া তৈরির জন্য দুধ দিয়ে ঘরেই দই তৈরি করেন খোকন মিয়া।

দই বড়া তৈরির উপাদান কম হলেও এর দাম কিন্তু কম নয়। সাদা রঙের প্লাস্টিকের ছোট, বড়, মাঝারি সাইজের বাটিতে করে বিক্রি হয় দই বড়া।

পাঁচটি দইবড়ার একবাটির দাম ১০০ টাকা, ১০টির একবাটির দাম পড়ে ২০০ টাকা আর ১৫টির দাম ৩০০ টাকা।

প্রতিদিন প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ দইবড়ার বাটি বিক্রি করে থাকেন খোকন মিয়া। দৈনিক গড়ে তিনি ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার দইবড়া বিক্রি করেন।

খোকন মিয়ার মত চক বাজারে দই বড়া বিক্রি করেন অনেকেই। এদেরই একজন আব্দুল হালিম। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘রমজানে চকবাজারের বিশেষ ইফতার আয়োজনে দই বড়া কয়েক যুগ ভোজনবিলাসীদের রসনা মেটাচ্ছে।’

তবে শঙ্কার কথাও জানালেন খোকন মিয়া। তিনি জানান, দিন দিন দই বড়ার তৈরির কারিগর কমছে। ফলে এর দোকানও যেমন কমছে, কমছে বিক্রিও।

দই বড়ার শুধু কি পুরান ঢাকাবাসীরাই খান নাকি ঢাকার অন্য প্রান্তের বাসিন্দারও এর স্বাদ চেখে দেখেন? জানতে চাইলে আব্দুল হালিম বলেন, ‘শুরুর দিকে পুরান ঢাকার ক্রেতারাই সবচেয়ে বেশি খেতেন দই বড়া। এখন এটি আর পুরান ঢাকাবাসীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এর স্বাদে মজেছেন অনেকেই।

চকবাজারে দই বড়ার স্বাদ আস্বাদনে এসেছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। আনিসুর রহমান নাম এক ক্রেতা বলেন, ‘পুরান ঢাকায় আছি আজ ২৫ বছর ধরে। বছর দশেক আগে যখন আমি প্রথম বার চকবাজারে ইফতার কিনতে আসি তখন চোখে পড়ে এই দই বড়া। সেবারই প্রথম খাই। এরপর এটি প্রায়ই খাওয়া হয়। এখন ইফতারের জন্য কিনতে এলাম।

টক-জ্বাল-মিষ্টির স্বাদের এই দই বড়া রাজধানীর অনেক জায়গায় পাওয়া গেলেও প্রকৃত স্বাদ পেতে আপনাকে যেতেই হবে চকবাজারে।

ঢাকাটাইমস/৫জুন/পিএ/এজেড