বাসেত মজুমদারের ‘শোনায় ভুল’

প্রকাশ | ০৮ জুন ২০১৭, ১৭:০৮ | আপডেট: ০৮ জুন ২০১৭, ১৯:১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

চট্টগ্রামে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী আবদুল কুদ্দুসকে জামিন পাইয়ে দেয়ার চেষ্টায় আদালতে কোর্টে আটকে রাখার’ ঘটনার একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রবীণ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার। তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে কানে তিনি ভাল শুনছেন না। তিনি ভেবেছিলেন আদালত তার মক্কেলকে জামিন দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট ল রিপোর্টার্স ফোরামে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন এই আইনজীবী।  সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়নসহ বাসেত মজুমদারের জুনিয়র আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ৬ জুলাই হত্যাচেষ্টা মামলার এক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ হওয়ার পর পুলিশকে বিভ্রান্ত করে তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার। পরে ক্ষমা চেয়ে সেই আসামিকে পুনরায় ফেরত এনে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পর ছাড়া পান জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী।

বাসেত মজুমদার দাবি করেন, তিনি ইচ্ছাকৃত কিছু করেননি। তিনি বলেন, ‘কিছুদিন হইতে আমি অনুভব করিতেছি যে, আমার কথা শুনিতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। তাই কোর্ট হইতে বাহির হওয়ার সময় পুলিশের জিজ্ঞাসায় আমি বলিয়াছি, মনে হয় কোর্ট বিষয়টি ক্ষমা করে দিয়েছেন। এই বলিয়া আমি অন্য কোর্টে চলিয়া গেলাম। পরবর্তীতে আমাকে সংবাদ দিল কোর্টে আসার জন্য, সেমতে কোর্টে আসিলে বিচারক আমাকে বলেন, আমি তো ওকে ছাড়ি নাই। আপনি তাকে ছাড়তে বললেন কেন? আমি বললাম যা-হোক বোধহয় আমার হয়তো শুনিতে অসুবিধা হয়েছে।’

লিখিত বক্তব্যে বাসেত মজুমদার বলেন,‘আমি আজ আপনাদের সামনে অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। আমার  দীর্ঘ ৫০ বছরের ওকালতি জীবনে এইরকম ঘটনা আমাকে আগে কখনো সম্মুখীন হতে হয় নাই।’

এই আইনজীবী বলেন, ‘গত ৬ জুন এনেক্স কোর্ট ৭ এ আগাম জামিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে যে ঘটনা ঘটেছে তা বিভিন্ন পত্রিকায় বিকৃতভাবে প্রকাশ করায় আমি তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

ওই দিনের ঘটনা উল্লেখ করে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এ ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘জৈনিক জুনিয়র আইনজীবী রেজাউল করিম আমাকে একটি আগাম জামিন শুনানির জন্য অত্যন্ত পীড়াপীড়ি করে, শেষ পর‌্যন্ত তার অনুরোধে এই মামলাটি শুনানি করি। আসামির বিরুদ্ধে ৩২৬/৩০৭ ধারাসহ অন্যান্য ধারায় অপরাধ ছিল। বিজ্ঞ বিচারপতি মো. মিফতা উদ্দিন চৌধুরী এবং বিচারপতি এ এন এম বশির উল্লাহ শুনানিকালে বলেন, অপরাধ অত্যন্ত গুরুতর, তাকে আগাম জামিন দেব না, তাকে জেলে পাঠিয়ে দেব এবং পুলিশকে বললেন ব্যবস্থা করার জন্য। আমি মক্কেলের পক্ষে বিনয়ের সাথে আবেদন করলাম যে, দয়া করে এই রোজার মাসে তাকে ক্ষমা করে দেন। এ সময় কোর্টের সাথে কিছু কথাবার্তা হয়। এক পর্যায়ে কোর্টের কথাবার্তা আমার নিকট প্রতীয়মান হইল যে, কোর্ট বোধহয় তাকে ক্ষমা করেছেন।’

সেদিন আদালতে আটকে থাকার পর জুনিয়রকে দিয়ে মক্কেলকে ডাকিয়ে আনার কথা উল্লেখ করে বাসেত মজুমদার বলেন, ‘এ পর্যায়ে বিচারক আমাকে আদেশ দিলেন জুনিয়রকে নিয়ে আসার জন্য। পরবর্তীতে জুনিয়র কে খবর দিয়ে নিয়ে আসলাম এবং বিচারক তাহাকে আদেশ দিল মক্কেলকে নিয়ে আসার জন্য এবং জুনিয়র কিছুক্ষণপরে মক্কেলকে নিয়া আসলেন এবং মাননীয় আদালত আসামিকে জেলখানায় পাঠিয়ে দিলেন।’

এই ঘটনাটি বিকৃতভাবে পত্র-পত্রিকায় উপস্থাপন হয়েছে দাবি করে বাসেত মজুমদার বলেন, ‘বিকৃতভাবে উপস্থাপনা করার জন্য আমি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি।’

ঢাকাটাইমস/০৮জুন/এমএবি/ডব্লিউবি