দরিদ্র শিশুদের ভাগ্যবিড়ম্বিত স্কুল

প্রকাশ | ১১ জুন ২০১৭, ১৪:০৯ | আপডেট: ১২ জুন ২০১৭, ০৯:১৫

নাঈমুল হাসান রাসেল, বরগুনা

স্কুলের নাম দক্ষিণ খাজুরতলা আদর্শগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির জন্যে সরকার ঘোষিত নির্দিষ্ট জমি রয়েছে। স্বল্প পরিসরে রয়েছে স্কুল মাঠ। স্থানীয়দের চাঁদার টাকায় নির্মিত হয়েছে টিনশেড স্কুল ঘরও। রয়েছে দেড় শতাধিক নিয়মিত শিক্ষার্থী। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বিনা বেতনে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষকতা করে আসছেন চারজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক।

অথচ বরগুনা সদর উপজেলার ভূমি অফিস কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার অভাবে আটকে আছে নিম্ন আয়ের ছিন্নমূল পরিবারের দুই শতাধিক দরিদ্র শিশুর শিক্ষাজীবন। আটকে আছে বিদ্যালয়টির উন্নয়ন প্রচেষ্টা। সব থাকতেও দীর্ঘ ১০ বছরে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ তো দূরের কথা রেজিস্টার্ড স্কুলেও উন্নীত করা সম্ভব হয়নি।

ভুক্তভোগী গ্রামবাসী এবং বরগুনার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারিভাবে এ বিদ্যালয়টির জন্যে নির্দিষ্ট জমি বরাদ্দ থাকলেও তা বিদ্যালয়টির নিজ নামে না থাকায় এতদিনেও স্কুলটি সরকারিকরণ করা সম্ভব হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের দক্ষিণ প্রান্তে খাগদন নদীর পারে সরকারি জমিতে জেলার নিম্ন  আয়ের ছিন্নমূল পরিবারের পুনর্বাসনে স্থাপন করা হয় দক্ষিণ খাজুরতলা আদর্শ গ্রাম। এ পর্যন্ত এ গ্রামে বিভিন্ন সময়ে সরকারিভাবে পুনর্বাসিত হয়েছে নিম্ন আয়ের চার শতাধিক ছিন্নমূল পরিবার।

শুরুর দিকে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদ এবং ঈদগাহের জন্যে জমি বরাদ্দ দেয়া হয় সেখানে। গ্রামটির চারপাশে তিন বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় প্রয়োজনের তাগিদে ২০০৭ সালে স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় সরকার নির্ধারিত নির্দিষ্ট জমিতে স্থাপিত হয় দক্ষিণ খাজুরতলা আদর্শগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সংশ্লিষ্ট গৌরিচন্না ইউনিয়ন ভূমি অফিস কর্তৃপক্ষ স্কুলটির জন্যে আইনানুগভাবে জমি বরাদ্দ দেয়া যেতে পারে বলে ইতিবাচক সুপারিশ করেছে। স্কুলটির নামে জমি বরাদ্দের জন্যে বরগুনা সদর উপজেলা ভূমি অফিসকে বারবার সুপারিশ করেছেন- গৌরীচন্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) আব্দুল খালেক, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্বাস হোসেন মন্টু মোল্লা, এমনকি বরগুনা-০১ আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুও। তারপরেও অদৃশ্য কারণে আজও কোন সমাধান পায়নি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ভাগ্যবিড়ম্বিত এই স্কুলটি।

জেলা প্রশাসক ড.মহা. বশিরুল আলম বলেন, তিনি খোঁজ নিয়ে প্রকৃত বিষয়টি জেনে নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

(ঢাকাটাইমস/১১জুন/প্রতিনিধি/এলএ)