ট্রেন থেকে ফেলে হত্যা: ৪২ দিন পর লাশ উত্তোলন

প্রকাশ | ১২ জুন ২০১৭, ১৯:১১

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ব্যবসায়ী মো. হাবিবুর রহমানকে ট্রেন থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগে চট্টগ্রাম প্রধান বিচারিক আদালতে নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার দুপুর ১২টায় ভৈরব পৌর কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।

নির্বাহী হাকিম চিত্রা শিকারি উপস্থিতিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম পুলিশ ব্যুরো ইনভেগেস্টিশন (পিআইবি) ওসি মো.জাহাঙ্গীর, মামলার বাদী অ্যাডভোকেট আয়ুব হোসেন, ভৈরব থানা উপ-পরিদর্শক আসাদুল হক আসাদ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, নিহতের ভাই অ্যাড আয়ূব হোসেন গত ১৭ মে চট্টগ্রাম আদালতে এই মামলা করেন। এই মামলায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম এবং ১১ পুলিশসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, ট্রেনযাত্রী হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে রেলওয়ে পুলিশ ১৭ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে মারধরের পর আহত করে ট্রেন থেকে নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়। পরে আদালত গত ২৮ মে নিহতের লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের এক আদেশ করে।

নির্বাহী হাকিম চিত্রা শিকারি জানান, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়। লাশ কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (পিআইবি) ওসি মো. জাহাঙ্গীর বলেন, আদালত আদেশ মতে মামলার তদন্তের জন্য মামলার যাবতীয় তথ্যসমূহ সংগ্রহ করে আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। সে জন্য সোমবার ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়।

মামলার বাদী অ্যাডভোকেট আয়ুব হোসেন জানান, আমার ভাই মো. হাবিবুর রহমান দীর্ঘদিন যাবত চট্টগ্রামে মানি একচেঞ্জের ব্যবসা করতেন। পরিবার নিয়ে তিনি সেখানেই থাকতেন। গত ১ মে তিনি ব্যবসায়িক কাজে চট্টগ্রাম থেকে আন্তঃনগর মেঘনা ট্রেনে খ বগির ৪৪ নাম্বার সিটে বসে চাদঁপুর যাচ্ছিলেন।

এদিন ওই ট্রেনটি সীতাকুন্ড পৌঁছলে ট্রেনে কর্তব্যরত রেলওয়ে পুলিশ যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশি শুরু করে। এসময় হাবিবুর রহমানের ব্যাগে দেশি-বিদেশি টাকা দেখে তাকে সিট থেকে তুলে বাথরুমের কাছে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় পুলিশ তার টাকা ভর্তি ব্যাগটি জোর করে নিতে চাইলে সে বাধা দেয়। তখন পুলিশ তাকে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত করে বারবকুন্ড এলাকায় ধাক্কা দিয়ে ট্রেন থেকে ফেলে দেয় বলে মামলার বাদী অভিযোগ করে।

এসময়  হাবিবুর রহমান ট্রেনে কাটা পরে মারা যায়। পরে রেলওয়ে পুলিশ তার ব্যাগসহ ১৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। এই ঘটনার খবর পেয়ে নিহতের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছলে রেলওয়ে পুলিশ তড়িঘড়ি করে তার লাশ কোন ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। পরে ভৈরবে তার লাশ এনে গত ২ মে  পৌর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

তিনি আরো বলেন, তার ভাইয়ের হত্যার বিচার যেন সুষ্ঠুভাবে করা হয় তা সরকারের কাছে দাবি জানান।

(ঢাকাটাইমস/১২জুন/প্রতিনিধি/এলএ)