পাহাড় ধসে তিন জেলায় নিহত অন্তত ৩৯

প্রকাশ | ১৩ জুন ২০১৭, ১৪:১৬ | আপডেট: ১৩ জুন ২০১৭, ১৫:৫৯

ঢাকাইমস ডেস্ক

ভারী বর্ষণে চট্টগ্রাম বিভাগের তিন জেলায় পাহাড় ধসে অন্তত ৩৯ জনের মৃত্যুর খর পাওয়া গেছে। ধসে পড়া মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে সেনা সদস্যসদ বেশ কয়েকজন। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন উদ্ধার কর্মীরা।

এখন পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী রাঙ্গামাটিতে ২০ জন, চট্টগ্রামে ১২ জন এবং বান্দরবানে সাত জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।

সোমবার রাত থেকে ভারী বর্ষণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। অতিবর্ষণের কারণে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ এবং স্থানীয়রা সকাল থেকে উদ্ধার অভিযানে নিয়োজিত রয়েছে। তবে যেসব এলাকায় ধসের ঘটনা ঘটেছে তার বেশ কয়েকটি দুর্গম হওয়ায় উদ্ধার কাজ পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

রাঙ্গামাটি থেকে আমাদের প্রতিনিধি হিমেল চাকমা চানান, জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে ২০ জন মারা গেছে। ভারী বর্ষণে  শহর এবং আশেপাশের এলাকায় পাহাড় ধসে এ ঘটনা ঘটেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিহতদের মধ্যে রাঙ্গামাটি শহরে ১৫ জন, কাপ্তাই উপজেলায় দুজন ও কাউখালীতে তিনজন রয়েছে।

নিহতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন- রুমা আক্তার, নুরি আক্তার, জোহরা বেগম, সোনালি চাকমা, অমিত চাকমা, আয়ুস মল্লিক, লিটন মল্লিক, চুমকি দাস, মাহিমা আক্তার, মো. বাবু।  বাকিদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

রাঙামাটির সদর উপজেলার মানিকছড়ি এলাকায় পাহাড়ধসের ঘটনায় সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্পে হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে তিন সেনা সদস্যের মৃত্যর খবর পাওয়া গেছে। এরা হলেন-মেজর মাহফুজ, ক্যাপ্টেন তানভীর ও সৈনিক শাহিন। এছাড়া আহত অবস্থায় পাঁচ সেনা সদস্য হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন শহীদ তালুকদার ঢাকাটাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সড়ক যোগাযোগও বন্ধ। এছাড়া মোবাইলের নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না।

বান্দরবানে সাতজনের মৃত্যু

আমাদের বান্দরবান প্রতিনিধি মং খিং জানিয়েছে, এই পাহাড়ি জেলায় এখন পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। ভারী বর্ষণে সোমবার দিবাগত রাতে জেলার কালাঘাটা, আগাপাড়া ও জাইল্লাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা স্বপন কুমার ঘোষ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহতদের মধ্যে আছে শহরের আগাপাড়ার একই পরিবারের শুভ বড়ুয়া, মিঠু বড়ুয়া, লতা বড়ুয়া ও কালাঘাটা কবরস্থান এলাকার রেবি ত্রিপুরা। জাইল্লাপাড়ায় একই পরিবারের মা কামরুন্নাহার ও মেয়ে সুফিয়া। অন্যদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

চট্টগ্রামে ১২জনের প্রাণহানি

ভারী বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলায় পাহাড় ধসে শিশুসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাহাড় ধসের ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই জন। তাদেরকে বান্দরবান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 ভোরে চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের শামুকছড়ি ও চনগুনিয়া চারজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় আরও আট জন নিহত হয়েছেন।

ধোপাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোরশেদুল আলম এ হতাহতের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।

এছাড়া রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুরে চারজন এবং রাজানগরে চারজন করে পাহাড় ধসে আট জন নিহত হয়েছেন। উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামাল হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৩জুন/প্রতিনিধি/জেডএ)