ছোট্ট শাহ আলমের তেলাওয়াতে মুগ্ধ তারাবির মুসল্লিরা

প্রকাশ | ১৫ জুন ২০১৭, ০৯:৩৮

আমিনুল হক সাদী, কিশোরগঞ্জ থেকে

বয়স এখনো ১২ পেরোয়নি। পুরো কোরআন তার মুখস্থ। সে ৩০ পারা কোরআন মুখস্থ করেছে মাত্র ২২ মাসে। তার কণ্ঠেও আছে জাদু। এবারের রমজানে তারাবি পড়াচ্ছে। তার তেলাওয়াত শুনে মুগ্ধ মুসল্লিরা। দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা আসছেন তার তেলাওয়াত শোনার জন্য।

হাফেজ শাহ আলমের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার হাটশিরা গ্রামে। তার বাবার নাম কাজল মিয়া। সে এবার কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের নয়াপাড়া জামে মসজিদে তারাবি পড়াচ্ছে।

শাহ আলম জানায়, প্রথমে সে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে। কিন্ত তার কাছে স্কুলের পড়ায় মন বসছিল না। তাই নিজ উদ্যোগেই মহিনন্দ মিছবাহুল উলুম মাদ্রাসার হেফজখানায় ভর্তি হয়। সে মাদ্রাসা থেকেই ২০১৪ সালে হেফজ সম্পন্ন করে। হেফজ সম্পন্ন করায় মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আশরাফ আলী তাকে পাগড়িও পরিয়ে দেন।

মাওলানা আশরাফ আলী জানান, হাফেজ শাহ আলম হেফজ পড়া অবস্থায় ভাস্করখিলার নতুন মসজিদে প্রথম বছরে পাঁচ দিন, পরের বছরে আরও কিছুদিন করে তারাবির নামাজ পড়ায়। বিষয়টি জানতে পেরে নয়াপাড়া জামে মসজিদ কমিটির লোকজন শাহ আলমকে তারাবি পড়াতে বলেন। রমজানুল মোবারকের প্রথম দিন থেকেই সে এখন নিয়মিত মধুর কণ্ঠে তারাবির নামাজ পড়াচ্ছে।

স্থানীয় মুসল্লি মোস্তাকিম বলেন, ‘এই ছোট্ট হুজুরের পেছনে নামাজ পড়ে আমরা খুবই তৃপ্তি পাই। অল্প বয়সে সুন্দর করে তেলাওয়াত সবাইকে মুগ্ধ করে।’

এছাড়াও এ মসজিদে জুবায়ের নামে আরও একজন হাফেজে কোরআন নামাজ পড়াচ্ছেন বলে মুসল্লিরা জানিয়েছেন।

ছোট্ট হাফেজে কোরআন শাহ আলম জানায়, কোরআনুল কারীমের হাফেজ হতে পেরে সে খুবই গর্বিত। তার ইচ্ছা দেশের বাইরে গিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করা। বড় হয়ে কোরআনের খাদেম হতে চায় শাহ আলম।

কিশোরগঞ্জ নয়াপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা হোসাইন আহমেদ হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘(কেয়ামতের দিন) হাফেজে কোরআনকে বলা হবে: পড় এবং আরোহন কর! তেলাওয়াত কর যেভাবে দুনিয়াতে তেলাওয়াত করতে! নিশ্চয় সেটাই হবে তোমার স্থান, যেখানে তোমার পড়া থেমে যাবে।’

স্থানীয় কয়েকজন মুসল্লিরা বলেন, মসজিদকেন্দ্রিক মক্তবগুলো প্রায় বিলুপ্তির পথে। এক সময় এ শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে মুসলিম শিশুরা ইসলামের প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করত। কোরআনের পবিত্র ছোঁয়ায় তাদের জীবন আলোকিত হতো। কিন্তু এখন সেই ব্যবস্থা আর তেমন বাকি নেই। শাহ আলম হতে পারে মুসলিম শিশুদের জন্য উদাহরণ।

(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/প্রতিনিধি/জেবি)