নতুন ভ্যাট আইনে আবাসন খাতের ক্ষতি হবে: রিহ্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৭ জুন ২০১৭, ২৩:০৩| আপডেট : ১৭ জুন ২০১৭, ২৩:০৪
অ- অ+

নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হলে আবাসন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।

শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ২০১৭-১৮ এর ওপর রিহ্যাবের প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এই দাবি করেন।

রিহ্যাবের প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাব উত্থাপনের আগে রিহ্যাবের নেতারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বিভিন্ন দাবি নিয়ে পৃথক পৃথক বৈঠক করেছিলেন। গণমাধ্যমের কাছে আমাদের দাবি এবং প্রস্তাবগুলো তুলে ধরার লক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনেরও আয়োজন করেছি। রিহ্যাবের বাজেট প্রস্তাবনায় আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলাম সরকারের পক্ষ থেকে একটি তহবিল গঠনে। কারণ, সরকারের পক্ষ থেকে সিঙ্গেল ডিজিট সূদে ঋণের ব্যবস্থা করা হলে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জন্য আবাসন খুব সহজেই সম্ভব হতো।

তিনি বলেন, মধ্যবিত্তের আবাসনের স্বপ্নপূরণ করতে এবং আবাসন খাতে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আমরা ‘হাউজিং লোন’ নামে ২০ হাজার কোটি টাকার রিফিন্যান্সিং করার দাবিও জানিয়েছিলাম। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা বা বক্তব্য ছিল না।

রিহ্যাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নুরন্নবী চৌধুরী শাওন বলেন, ‘বর্তমানে রেজিস্ট্রেশন ব্যয় ১৪ শতাংশ থেকে ১৬ শতাংশের ওপরে হওয়ায় ফ্ল্যাট এবং জমি কেনাবেচা ভয়াবহভাবে কমে গেছে। আমরা রেজিস্ট্রেশন খরচ ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু আমাদের এ দাবি বিবেচনা করা হয়নি। একটা ফ্ল্যাট কেনার পর বিক্রি করলে নামমাত্র খরচে রেজিস্ট্রেশন হওয়ার নিয়ম বিভিন্ন দেশে আছে। তাতে সম্পদ হস্তান্তর সহজ হলে মানুষ এই খাতে বিনিয়োগ করতে বেশি আগ্রহী হতো। সেকেন্ডারি মার্কেট সৃষ্টির সুবিধাও বাজেটে রাখা হয়নি। এছাড়া আরও বেশ কিছু দাবি আমরা করেছিলাম, যার কোনোটারই কোনো প্রতিফলন এই প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে নেই।’

নুরুন্নবী চৌধুরী বলেন, ‘২০১৭-১৮ অর্থবছরে অর্থমন্ত্রী যে বাজেট উপস্থাপন করেছেন, তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে নির্মাণ তথা আবাসন খাত। ফ্ল্যাট কেনাবেচায় ১৫ শতাংশ ভ্যাটপ্রয়োগ শুরু হলে আবাসন খাতে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কারণ, ফ্ল্যাটের ওপর ভ্যাট ছিল ১ দশমিক ৫ থেকে ৪ দশমিক ৫ পর্যন্ত। গড়ে ৩ শতাংশ। এটা বর্তমানে হবে ১৫ শতাংশ। এমনিতেই এই খাত খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করা হলে তা হবে আবাসন খাতের কফিনে শেষ পেরেক মারা।’

নুরন্নবী চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান বাজারমূল্যে এক টনরডে ভ্যাট হবে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এছাড়া কাঁচা লোহা কিংবা স্ক্র্যাপ থেকে রড তৈরির সময় ফেরো ম্যাঙ্গানিজ, ফেরোসিলিকন, ফেরো সিলিকো ম্যাঙ্গানিজসহ বিভিন্ন উপাদান লাগে। এবার বাজেটে এই তিনটি পণ্যে আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ হারে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসানো হয়েছে। এতে সার্বিকভাবে এসব পণ্য আমদানি খরচ বাড়বে, যা রড তৈরির খরচ আরও বাড়িয়ে দেবে। তাছাড়া এবার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ায় এর ওপর ভ্যাট বাড়বে। সব মিলিয়ে রডের দাম প্রতি টন ৯-১০হাজার টাকা বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে।

তিনি বলেন, রডের পরে আসে সিমেন্টের কথা। এই সিমেন্টের প্রধান কাঁচামাল ফ্লাই অ্যাশ। ফ্ল্যাই অ্যাশ আমদানিতেও ১০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী ১ জুলাই থেকে বোল্ডার স্টোন ও স্যান্ডস স্টোন আমদানিতে যথাক্রমে ১৫ ও ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রক শুল্ক দিতে হবে। একইভাবে নির্মাণ খাতের অন্যতম উপাদান ইটের খরচও বাড়বে ভ্যাটের কারণে। প্রাকৃতিক বালুর উপরও ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। যা আগে কোনো সময়েই ছিল না। সার্বিকভাবেই নির্মাণের পাঁচটি উপাদান রড, সিমেন্ট, ইট ও পাথর, বালির দাম বাড়বে। ফলে এই সেক্টরে আরো ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে। এই খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত দুই কোটি মানুষের আয়ের পথ আরও মুখ থুবড়ে পড়বে।

ঢাকাটাইমস/১৭জুন/জেআর/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
১৭ বছর পর কারামুক্ত লুৎফুজ্জামান বাবর
শিশুর চোখে ভুল অপারেশন করা সেই চিকিৎসক গ্রেপ্তার
বিদায়ী ভাষণে ‘বিপজ্জনক’ ধনিকতন্ত্রের থেকে মার্কিনিদের সতর্ক করলেন বাইডেন
বরিশালের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে ঢাকা 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা