জাবির ২৩২ কোটি ৫ লাখ টাকার বাজেট

প্রকাশ | ১৭ জুন ২০১৭, ২৩:১৪ | আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭, ২৩:৩৪

জাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য মোট ২৩২ কোটি ৫লাখ টাকা ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য সংশোধিত ২০৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে।

শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬ তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে এ বাজেট পাশ হয়।  

মূল বাজেটে বার্ষিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং ক্রমপুঞ্জিভূত ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩২ কোটি ৭৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।

অধিবেশনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল খায়ের ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের ২০৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট এবং ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের জন্য ২৩২ কোটি ৫ লাখ টাকার মূল বাজেট পেশ করেন। পরে সিনেট সদস্যরা তা অনুমোদন করেন। এবারের ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে ১৪টি খাতে ৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা এবং ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটে ১৯টি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরের মূল বাজেটে যে সব খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে তা হলো, অনুষদ, বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের শিক্ষা সরাঞ্জম খাতে ১৭ লাখ টাকা। বিভাগ সমূহের ফিল্ড ওয়ার্ক খাতে মোট ৩.৭৫ লাখ টাকা।

এছাড়া, অনুষদ, বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের সেমিনার অনুষ্ঠান খাতে মোট ১.২৫ লাখ টাকা, সাময়িকী প্রকাশনা খাতে ২ লাখ টাকা। চিকিৎসা কেন্দ্রের ওষুধপত্র ও ড্রেসিং দ্রব্যাদি ক্রয়, হাসপাতালকরণ ও ডাক্তারি যন্ত্রপাতি মেরামত খাতের বরাদ্দ যথাক্রম ১৮.৭৫ লাখ, ৫০ হাজার ও ৩০ হাজার টাকা।

সকল আবাসিক হলে বাগান রক্ষণাবেক্ষণ খাতে লাখ টাকা। 

সকল অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও আবাসিক হল কন্টিনজেন্সি খাতে ৩.০৫ লাখ টাকা। গ্রন্থাগার অফিসের জার্নালের চাঁদা খাতে ২ লাখ টাকা। পূর্ত বিভাগের আবাসিক ভবন ও অফিস ভবন মেরামত ও রাস্তাঘাট মেরামত খাতে যথাক্রমে ১৭০ লাখ ও  ৫০ লাখ টাকা। আসবাবপত্র ক্রয় খাতে ১৫০ লাখ টাকা। অফিস সরঞ্জাম ক্রয় খাতে ৭৫ লাখ টাকা। কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ ক্রয় খাতে ৫৫ লাখ টাকা। যানবাহন ক্রয় বদল খাতে ১৯৭ লাখ টাকা। 

সিনেট অধিবেশনে সাধারণ আলোচনায় সিনেটবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দোলনে প্রশাসন কতৃক শিক্ষার্থীদের ওপর মামলা দায়েরের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 

সিনেটে রেজিস্টার গ্রাজুয়েটদের মধ্যে আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্ভুদ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ব্যার্থ হয়েছে। এত শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।” 

পরে সিনেটরদের বক্তব্য শেষে শিক্ষকদের তোপের মুখে পড়েন রেজিস্টার গ্রাজুয়েট প্রতিনিধিরা। তাদের মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্যেরও প্রতিবাদ জানান একাধিক শিক্ষক। এর মধ্যে অনেকে শিক্ষার্থী কতৃক শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন।

এসময় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনাকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আমজাদ হোসেন বলেন, “ওই দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার সাথে বিশ^বিদ্যালয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তারা আরিচা মহাসড়কে মারা গেছে বলেই কি বিশ^বিদ্যালয়কে এখানে সংশ্লিষ্ট হতে হবে? তারা তো দেশের যেকোন জায়গায় মারা যেতে পারত। তখন এসব শিক্ষার্থীরা কি বলত বলেও প্রশ্ন রাখেন তিনি। আর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর, শিক্ষক, কর্মকর্তা- কর্মচারীদের ওপর হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনের নেয়া ব্যবস্থা যুক্তিযুক্ত বলে উল্লেখ করেন তিনি।

অন্যদিকে সিনেটের সভাপতি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম রেজিস্টার গ্রেজুয়েটদের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, “আপনারা ঐদিন ছিলেন না। কি হয়েছে তা আপনারা জানেন না। আমরা সেখানে ছিলাম, আমরা জানি। আমার শিক্ষক ও কর্মকর্তারা সেদিন আহত হয়েছিলো। ছাত্রদের প্রতি আপনারাদের এমন বক্তব্যে আমরা কি ধরে নেব আপনারা নতুন কোন এজেন্ডা সেট করতে এখানে এসেছেন। এসময় শিক্ষক- শিক্ষার্থী ঐক্যমঞ্চের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।” 

বক্তব্যের একপর্যায়ে সাংবাদিকদের সমালোচনা করে উপাচার্য বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের সংবাদ প্রতিনিধিরা আমাদের ছাত্র। আমরা তাদের ধন্যবাদ দিতে পারি না। কারণ তারা মূল ঘটনা লিখেনি। তারা শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংবাদ প্রকাশ করেছে। শিক্ষক, কর্মকর্তা- কর্মচারী আহত  হয়েছে। তারা তাদের কথা শুনতে চায়নি। এদেরকেও আমাদের এখানে বসাতে হয়। আমরা জানি তারা এখান থেকে গিয়ে আাবার এমন নিউজ করবে। তারা সবসময় শিক্ষকদের দোষ নিয়ে লেখালেখি করে। আমিও দেখতে চাই সত্য লেখার হাত এদের আছে কিনা।”।

(ঢাকাটাইমস/১৭জুুন/প্রতিনিধি/ইএস)