বাবাকে দেখে আমার পুলিশ হবার ইচ্ছা হতো: পরীমনি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৮ জুন ২০১৭, ১৭:৪৯ | প্রকাশিত : ১৮ জুন ২০১৭, ১৭:৪৬

প্রতিটি সন্তানেরই ছোটবেলার নায়ক থাকেন তার বাবা। সে বড় হয়ে তার মতোই হতে চায়। জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনিও ছোটবেলায় তার বাবার মতোই পুলিশ হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বড় হয়ে হলেন নায়িকা। আজ বাবা দিবসে পরী তার ফেসবুকে বাবাকে নিয়ে একটি আবেগী লেখা স্ট্যাটাস হিসেবে দেন। সেখানে তিনি লেখেন ছোটবেলায় তার পুলিশ বাবাকে দেখে তারও পুলিশ হতে ইচ্ছে হতো। যদিও পরী খুব ছোটবেলায়ই তার মাকে হারায়। আর বাবা তার বেশিরভাগ সময়ই দেশের বাইরে কাটান। নিচে তার ফেসবুকের স্ট্যাটাসটি হুবহু দেয়া হলো।

“বাবা,

তুমি কি বাবা! নাহ তোমাকে কিছু লিখবো না আমি আজ। লিখবো তোমাকে নিয়ে।

হ্যালো ফেসবুক দুনিয়া, শোন কতই তো বাবা দিবস গেল। আমি শুধু দেখেই গেছি সবার বাবা দিবসের কত কত পোস্ট। এবার আমিও দিলাম। দেয়ার একটা কারন ছিলো । ছবিটাতে আমি আমার বাবা মনিরুল ইসলাম এর সাথে। বাবা বেঁচে নেই আজ ৮ বছর হয়ে যাচ্ছে। বাবা পুলিশ ছিলেন। বাবার শরীরে পুলিশের পোশাক দেখে আমার ছোট্ট বেলার এইম জন্মেছিল পুলিশ হবার।

মা মরে যায় তখন আমি ৩ বছরেরও কম ছিলাম। বাবা এই ধাক্কাটা নিতে পারছিলেন না বলে দেশ ছেড়েন।

বাবার ছায়া করে পাই নানুভাইকে। নানু নানি দুজনই টিচার। নানু বাড়ী আর দাদু বাড়ী দু'বাড়ীরই বড় নাতি আমি। অনেক আহ্বল্লাদে বড় হওয়া আমার। কখনো এক বিন্দু অনুভব করিনি মা বাবার শুন্যতা। ভুল করেও মনে পরেনি কখনো। এমনকি এখন ভাবি আসলে মা বাবা কি জিনিস!

আজ সত্যি যদি বলি আমার বাবা হলেন আমার নানুভাই শামসুলহক গাজী । আর আমার জন্মদাতা বাবা হলেন মনিরুল ইসলাম। ওহ একটা মজার বিষয় বলি, অনেকেরই আমার নাম নিয়ে কৌতূহল দেখেছি। আসল নাম ,ডাক নাম ,কে রেখেছে ইত্যাদি ইত্যাদি ।

নাম কখনো আসল নকল হয় নাকি। হতে পারে ডাক নাম অথবা সার্টিফিকেট নাম। আমার পরী নামটা আমার নানিমনির দেয়া। তার নানির নাম ছিলো পরীবিবি। আমার জন্মের কিছুদিন আগে তার নানি মারা যান আর আমার জন্মের পর আমার নাম পরী হয়ে যায়। আর মনিটা সবাই আদর করেই চালু করে দিল। আমার সার্টিফিকেট নাম শামসুন্নাহার স্মৃতি। শামসুন মানে সূর্যের আলো নানুভাই এর নামের সাথে মিলকরে এই নাম। আর স্মৃতিটা বাবার জীবনের প্রথমবার হজ্জ করতে যেয়ে ঠিক করেছিলেন আল্লাহর কাছে মেয়ে চেয়ে। যদিও বাবা তখন নাকি বিয়েই করেননি। এসব বাবার কাছে শোনা আমার। বাবা মরে যাবার পর আমার স্মৃতি নামটা কেবল স্মৃতিই হয়ে গেল। সবাই বলে মেয়েরা নাকি বাবার স্বভাবি বেশি হয় একটু। আমিও নাকি আমার বাবার মতো বদমেজাজ, অনেক বেশি আবেগপ্রবণ , স্পটভাষী , প্রচন্ড সাহস এসব পেয়েছি। বাবার সাথে আমার অনেক বেশি স্মৃতি নেই। বড় হবার পর বাবাকে কাছে পেয়েছিলাম এক বছরের মতো। মনে আছে যেদিন বাবা দেশে ফিরে প্রথম আমার সামনে আসে। একটা ছোট্ট বাচ্চার মতো শব্দ করে সেকি কান্না! কতো যে রাত পোহাতো বাবা মেয়ের ,,,শুধু আমার ছোট্ট বেলার যতো গল্প কাহিনী... একদিন বাবার একটা সাদা রংঙ্গের শার্ট আমাকে দিয়ে খুলতে বললো। খুলে দেখি শার্টের ভেতর আঁকা বাঁকা হাতে শুধু বাবা বাবা...লেখা। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল হাতের লেখাটা একটা বাচ্চার হাতের। বাবা বুকের মধ্যে আমাকে ধরে চুপ করেছিলো । অনেক্ষণ পরে বললো ‘জানো এখানে ২৭৩ বার বাবা লেখা আছে। তুমি কেবল লিখতে শুরু করেছিলে তখন। কলম হাতে দেয়ার পর যেখানেই সুযোগ পেতে সেখানেই ছোট্ট করে বাবা শব্দটা লিখতে।’

ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা। ”

ঢাকাটাইমস/১৮জুন/এমইউ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :