রাঙামাটিতে দ্রবমূল্য স্বাভাবিক, যোগাযোগব্যবস্থা ঠিক হয়নি

প্রকাশ | ১৮ জুন ২০১৭, ১৯:৩২

হিমেল চাকমা, রাঙামাটি থেকে

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান বলেছেন, রাঙামাটির বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক। দুই একটি মিডিয়া ঘটনাস্থলে না এসে মনগড়া প্রতিবেদন তৈরি করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তা ঠিক নয়।

রবিবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক এসব কথা বলেন।

ডিসি বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে কাপ্তাই সড়কপথে এবং কাপ্তাই থেকে রাঙামাটি পর্যন্ত নৌপথে মালামাল আনা হচ্ছে। মালবাহী লঞ্চগুলোর মাধ্যমে যেকোনো ব্যবসায়ী মালামাল রাঙামাটিতে আনতে পারবেন। তাদের কাছ থেকে কোনো ভাড়া নেয়া হবে না।’

এ সময় ব্যবসায়ীরাও বলেন, বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। দুর্যোগ শুরুর পর আতঙ্কে মানুষজন অতিরিক্ত মাল মজুদ করতে গিয়ে বাজারে দ্রব্যমূল্যর সংকট দেখা দেয়। এখন সেই পরিস্থিতি নেই। বাজারে প্রতিনিয়ত প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ বাজার মনিটরিং টিম কাজ করছে।

ত্রাণ কার্যক্রম বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের তালিকা আগামীকাল সোমবার প্রস্তুত হবে। বর্তমানে ত্রাণের কোনো ঘাটতি নেই। আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া ক্ষতিগ্রস্তদের পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা খাদ্য সরবরাহ করছে। মোট ১৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে এ কার্যক্রম চলছে।

ডিসি বলেন, পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে প্রশাসনের কাছে। পৌর কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৫০০ বান্ডিল ঢেউটিন আগামীকাল সোমবার রাঙামাটিতে পৌঁছবে।

যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি 

রাঙামাটির সঙ্গে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক হয়নি। দিনভর গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় সড়ক সংস্কারের কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। খাগড়াছড়ির সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

সড়ক ও জনপদ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আবু মুছা বলেন, চট্টগ্রাম থেকে সাপছড়ির শালবাগান, শালবাগান থেকে রাঙামাটি পর্যন্ত যান চলাচল করছে। শালবাগান এলাকায় সড়কটি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাওয়ায় বিকল্প সড়ক বানাতে হবে। এতে সময় ও অনেক অর্থ লাগবে।

শহরকেন্দ্রিক বিদ্যুৎ সরবরাহ, বন্ধ আছে থ্রিজি সেবা

রাঙামাটি শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। তবে শহরের বাইরে এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়নি। মঙ্গলবার পাহাড় ধসের ঘটনার পর মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে মোবাইল সেবা। কোনো মোবাইল অপারেটরের থ্রিজি সেবা কাজ করছে না। এতে ব্যাহত হচ্ছে ব্যাংকিংসহ অন্যান্য সেবা। নেটওয়ার্ক আসা যাওয়ার মধ্যে থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন মিডিয়া কর্মীরা।

গত মঙ্গলবার ভোর ও সকালে রাঙামাটি জেলা বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসে  সেনাবাহিনী চার সদস্যসহ ১১৪ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে রাঙামাটি শহর এলাকায় মারা যায় ৬৬ জন, কাউখালী উপজেলায় ২৩ জন, কাপ্তাই উপজেলায় ১৮ জন, বিলাইছড়ি তিনজন এবং জুরাছড়ি উপজেলায় মারা গেছেন চারজন।

(ঢাকাটাইমস/১৮জুন/প্রতিনিধি/জেবি)