হারানো ‘রত্ন’ খুঁজে পেল পাকিস্তান

প্রকাশ | ২১ জুন ২০১৭, ০৮:৪৭ | আপডেট: ২১ জুন ২০১৭, ০৯:২১

জহির উদ্দিন মিশু, ঢাকাটাইমস

একটা সময় যার বলে ধসে পড়ত প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইন আপ। গুঁড়িয়ে যেত অল্পরানেই। বল হাতে প্রতিপক্ষকে পুড়িয়ে খানখান করে দিতেন। মাঝে সেই আমিরের অচেনা রূপ হতাশ করেছে তার সমর্থকদের। সম্প্রতি আগের রূপে ফিরেছেন মোহাম্মদ আমির। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে আমিরের তোপে দিশেহারা হয়ে পড়ে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। প্রথম সারির তিন তারকাকে বিদায় করে জয়ের চাবি লুফে নেন সরফরাজ বাহিনী।

এরপরেই আমিরকে নিয়ে শুরু নানা হিসেব-নিকেশ। আসলে কী সেই আমিরকে খুঁজে পেয়েছে পাকিস্তান। ২০০৯ সালে পাক ক্রিকেটে নাম লেখান আমির। ওই বছরের জুলাই মাসে জাতীয় দলের হয়ে ওয়ানডে ও টেস্ট ক্যাপ মাথায় উঠে আমিরের। দুর্দান্ত বোলিং করে বিশ্ব ক্রিকেটে সাড়া ফেলে দেন ১৭ বছরের কিশোর। সে সময় দেশটির কিংবদন্তি বোলার ওয়াসিম আকরামের সঙ্গে মেলানো হত আমিরকে। ২০১০ সালে তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারে রচিত হয় ভয়াবহ এক কালো অধ্যায়ের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অপরাধে ক্রিকেট থেকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাসিত হন আমির।

আলোচনার টেবিলে নাম লেখান আমির। চারদিকে তাকে নিয়ে চলে নিন্দার ঝড়। মাথা নিচু করে নীরবে-নিভৃতে আমিরও সয়ে যান সব যাতনা। দীর্ঘ পাঁচটি বছর নিষেধাজ্ঞার শেকলে বন্দী থেকে শেষমেশ ২০১০ সালে মুক্তি পান আমির। ২২ গজে ফিরেই দেখান চমক। পাকিস্তানের প্রথম শ্রেণির প্রতিযোগিতা কায়দে আযম ট্রফির বাছাইপর্বের ৪ ম্যাচে ৩৪ উইকেট। এরপর মূল প্রতিযোগিতায় ১৭ উইকেট নিয়েছিলেন আমির।

ডাক পড়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সিজন ফোরে। সেখানেও পারফরম্যান্স দিয়ে সবার নজর কাড়েন আমির। ভাইকিংসের হয়ে ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি। এমন নৈপুণ্যের সুবাদে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে পাকিস্তান জাতীয় দলের জার্সিটা আবারও গায়ে উঠে আমিরের। পুনর্জন্ম হয় পেস দুনিয়ার আতঙ্ক নামে পরিচিত মোহাম্মদ আমিরের।

কিন্তু জাতীয় দলে আমিরের প্রত্যাবর্তনের শুরুটা হতাশ করেছে অনেককে। তার পারফরম্যান্স দেখে মন ভরেনি সমর্থকদের। প্রথম নয় ওয়ানডে ম্যাচে আমির ঝুলিতে পুরেন ১২টি উইকেট। পরে অবশ্য তেমন কিছু দেখতে হয়নি। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে আমিরের ধার। ধীরে ধীরে আমির ফিরে পান তার অতীত জৌলুস।

২০০৯ সালে একদিনের ক্রিকেটে অভিষেক হয় আমিরের। ওই বছর থেকে ২০১০ সালে নিষিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ১৫টি ম্যাচ খেলেছেন আমির। নিয়েছেন ২৫টি উইকেট। যেখানে তার ইকোনোমি রেট ৪.৫৬। নিষেধাজ্ঞার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমির খেলেছেন ২১টি ওয়ানডে। দখল করেছেন ৩০টি উইকেট। যেখানে তার বোলিং ইকোনোমি রেট ৫.০৫। আমিরের নিষেধাজ্ঞার আগে আর পরের পরিসংখ্যানটা প্রায় সমানই। কেবল ওভার প্রতি রান খরচের মাত্রাটা খানিক বেশি।

(ঢাকাটাইমস/২১জুন/জেইউএম)