সার্কিট হাউজের বকেয়া পরিশোধ করলেন ইউএনওর মামলার বিচারক

প্রকাশ | ২৩ জুলাই ২০১৭, ১৮:০১ | আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭, ১৮:২৬

তন্ময় তপু, ঢাকাটাইমস

গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর বরিশাল সার্কিট হাউজের ৯৩ হাজার টাকারও বেশি বকেয়া ভাড়া পরিশোধ করেছেন বরিশালের মুখ্য বিচারিক হাকিম আলী হোসাইন। বরিবার সোনালী ব্যাংকের বরিশাল শাখায় একটি চালানের মাধ্যমে এই টাকা জমা দেন তিনি। এই চালানের একটি কপি ঢাকাটাইমসের হাতে এসেছে।

বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির মামলায় বরিশালের যে বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তারিক সালমনের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননার মামলা চলছিল আলী হোসাইনের আদালতে। তিনি গত বুধবার প্রথমে ইউএনওর জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠান। পরে অবশ্য আদেশ পাল্টে তার জামিন দেয়া হয়।

একটি শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হিসেবে নির্বাচিত ছবি উপজেলা প্রশাসনের আমন্ত্রণপত্রে ব্যবহারের ঘটনায় বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননার মামলায় প্রশাসন ক্যাডারে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এই মামলায় উষ্মা প্রকাশ করেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর মামলাকারী সৈয়দ উবায়েদউল্লাহ সাজুকে আওয়ামী লীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয় শুক্রবার। আর রবিবার সকালে তিনি মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন।

এর মধ্যে ইউএনওকে কারাগারে পাঠানো বিচারকের বরিশাল সার্কিট হাউজে সাত মাস থাকার পরও ভাড়া পরিশোধ না করার খবর ফাঁস হয়। গত ২১ জুলাই সার্কিট হাউজের সাত মাসের ভাড়া দেননি ইউএনওর মামলার বিচারক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে ঢাকাটাইমস।

বিচারক আলী হোসাইন ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে ২০১৬ সালের ২৮ জুন পর্যন্ত বরিশাল সার্কিট হাউজের পুরাতন ভবনের সাত নয় কক্ষটি ব্যবহার করেছেন। কিন্তু ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত চার দিনের মোট ৩৯০ টাকা ভাড়া পরিশোধ করা হলেও বাকি দিনগুলোর জন্য কোনো ভাড়া দেননি। 

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ওই কক্ষে এক থেকে তিন দিন পর্যন্ত প্রতিদিন ৯০ টাকা হারে এবং চার থেকে সাত দিন পর্যন্ত ১২০ টাকা হারে এবং সাত দিনের ঊর্ধ্বে প্রতিদিনের জন্য চারশ টাকা হিসাবে ভাড়া নির্ধারণ করা আছে। এই হিসাবে ওই বিচারকের কাছে মোট পাওনা হয় ৯৩ হাজার ৯৫০ টাকা। 

এই বকেয়া ভাড়া পরিশোধে ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট বিচারক আলী হোসাইনকে বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেজারত শাখা থেকে একটি চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু তিনি টাকা পরিশোধ করেননি।

তবে আজ রবিবার সোনালী ব্যাংকের বরিশালের করপোরেট শাখায় এক চালানের মাধ্যমে ৯৩ হাজার ৯৫০ টাকা জমা দেয়া হয়। অফিসার ক্যাশ মহিউদ্দিন আহমেদের সই করা ওই কাগজ অনুযায়ী এই টাকা জমা পড়ার চালান কোড ১/০৭৪২/০০০০/২৬৮১।

সোনালী ব্যাংকের বরিশাল করপোরেট শাখার উপমহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসাইন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আজ দুপুরে তার (বিচার আলী হোসাইন) সার্কিট হাউজের বকেয়া ভাড়া জমা পড়েছে।’

তবে এ বিষয়ে বরিশাল মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের সাথে কথা বা যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বরটিতে একাধিকবার ফোন করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

ঢাকাটাইমস/২৩জুলাই/টিটি/ডব্লিউবি