ডিসি সম্মেলনে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের বক্তব্য

প্রকাশ | ২৫ জুলাই ২০১৭, ১৮:৪৮ | আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭, ২০:০২

বিশেষ প্রতিনিধি (এই সময়), ফরিদপুর

জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিলেন ফরিদপুরের ডিসি উম্মে সালমা তানজিয়া। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের জন্ম ১৮৩৩ সাল থেকে আজ অব্দি ১৫৫ জন জেলা প্রশাসকের মধ্যে উম্মে সালমা তানজিয়া প্রথম নারী প্রশাসক। এর আগে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে একই সম্মেলনে এর আগে মাত্র একজন বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেদিক থেকে উম্মে সালমা তানজিয়া দ্বিতীয়। ২০১১ সালে ১ম ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক হিসাবে তৎকালীন জেলা প্রশাসক হেলালুদ্দিন আহমেদ (বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সচিব) এ সম্মেলনে বক্তব্য দিয়েছিলেন।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া এ মঞ্চে তাকে দাঁড়াবার সুযোগ করে দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি জন্য সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা জানান।

জেলার জনগণের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি দাবি করেন, জেলা প্রশাসক হিসেবে আপনার সরকারের নিকট ফরিদপুরের জনগণের দুইটি প্রত্যাশার কথা তুলে ধরতে চাই।

১। জাতির পিতার স্মৃতিধন্য ফরিদপুরকে দেশের ৯ম বিভাগ হিসেবে ঘোষণা।

২। উচ্চ শিক্ষার প্রসারে দক্ষিণ বঙ্গ ফরিদপুরে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।

তিনি বলেন, এসডিজি এবং ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সাথে সমন্বয় করে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২০২১ এবং ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নরে জন্য জেলা প্রশাসন দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সরকারের সাথে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির মাধ্যমে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। বাংলাদশের দারিদ্র্য দূরীকরণে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দুরূহ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়, উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে এবং দিন বদলের বার্তা বয়ে নিয়ে আসার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রসৈনিক হিসেবে নিরলস কাজ করে চলেছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প বাস্তবায়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, নারী ও শিশুবান্ধব পরিবেশের নিশ্চয়তা প্রদান, সবার জন্য বাসস্থান বিনির্মাণ, স্বচ্ছতার সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন, আগামী প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিবিড় তদারকি নিশ্চিতকরণ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বদ্ধপরিকর।

এছাড়া সরকারের ইতিবাচক ভাবমূর্তি এবং জনকল্যাণে গৃহিত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড জনগণের মাঝে তুলে ধরতে জেলা প্রশাসন নিরালস কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো  বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। এতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক ষড়যন্ত্র ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নয়- এটা এখন আনন্দময় এক বাস্তবতা। পদ্মা সেতুকে ঘিরে ইতোমধ্যে  মানুষের মধ্যে আশা জাগানিয়া ও উদ্দীপনামূলক চেতনার সৃষ্টি হয়েছে। এ চেতনাকে কাজে লাগাতে, আপনার সকল দিক-নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

প্রসঙ্গত, তিন দিনের এ সম্মেলনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা ১৮টি কার্য অধিবেশনে ডিসিদের সঙ্গে মতবিনিময় করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, বিভাগীয় কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।

তিন দিনের এই জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২২টি অধিবেশনে সাজানো হয়েছে। এবারের সম্মেলনে ৩৪৯টি প্রস্তাব দিয়েছেন ডিসিরা। এর মধ্যে কার্য-অধিবেশন হবে ১৮টি। এই ১৮টি কার্য-অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ মোট অংশ নেবে ৫২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/এসবি/এলএ)