ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ফিলিস্তিনি নিহত, আহত শতাধিক

প্রকাশ | ২৮ জুলাই ২০১৭, ১৩:২০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

আল আকসা মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লাগাতার সংঘর্ষে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে নিহত হয়েছেন ২৫ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি তরুণ। দুই সপ্তাহের ভেতর ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে এই নিয়ে মোট পাঁচজন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হলো।

মুহাম্মদ কানান নামের এই তরুণের মাথায় তিনদিন আগে গুলি করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। ওয়েস্ট ব্যাংকের রামাল্লাহ শহরের এক হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। কানান হাজার হাজার ফিলিস্তিনির সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর আল আকসা মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়ার প্রতিবাদে যোগ দিয়েছিল। জেরুজালেমের কাছাকাছি অবস্থিত হিজমা শহরে তার বাড়ি ছিল।

গত ১৪ জুলাই আল আকসা মসজিদের সামনে এক বন্দুকধারীর হামলায় দুই ইসরায়েলি পুলিশ ও তিন সন্দেহভাজন নিহত হওয়ার পর নিরাপত্তা জোরদার করে ইসরায়েলি প্রশাসন। তাদের অভিযোগ ছিল আল আকসার ভেতরেই হামলা অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিল ওই হামলাকারী। তাই আল আকসার প্রধান প্রবেশ পথে মেটাল ডিটেক্টর ও মসজিদের বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসায় ইসরায়েলি পুলিশ।

আল আকসার প্রধান প্রবেশদ্বারে মেটাল ডিটেক্টর বসানোর পরপরই ফিলিস্তিনের ধর্মীয় নেতারা মসজিদে প্রবেশে অস্বীকৃতি জানান। তারা দাবি করেন, এর মধ্য দিয়ে সহাবস্থানের নীতি ভঙ্গ করছে ইসরায়েল। যে সহাবস্থান নীতির একটি হচ্ছে সেখানে বিভিন্ন ধর্মালম্বীর প্রার্থনার সুযোগ রাখা হয়েছে। তাই ধর্মীয় নেতারা মসজিদের প্রবেশ পথ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান।

শুক্রবার জুমার নামাজের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকার পরও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিরাপত্তা ব্যবস্থা অটুট রাখেন। এছাড়া শুক্রবার জুমার নামাজে ৫০ বছরের কম বয়সীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইসরায়েলি পুলিশ প্রশাসন। এ নিষেধাজ্ঞার কথা সামাজিক মাধ্যম ও টেলিভিশনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরপরই ফিলিস্তিনিরা জড়ো হতে শুরু করেন আল আকসার সামনে।

শুক্রবার প্রতিবাদকারী ফিলিস্তিনিরা আল আকসা মসজিদের সামনের সড়কে জুমার নামাজ আদায় করে। এরপর এক প্রতিবাদ সভা করার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। গত শুক্র ও শনিবারের সংঘর্ষে চার ফিলিস্তিনি নিহত হন। অবশ্য এই সময়ে ওয়েস্ট ব্যাংক ছুরিকাঘাতে তিন ইসরায়েলি নিহত হন বলে দাবি করেছে তেল আবিব। এই অবস্থায় আরেক শুক্রবারের জুমার নামাজের আগেই সমধানের চাপ ছিল ইসরায়েলের ওপর। ফিলিস্তিনিদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে আল আকসার প্রবেশ পথ থেকে মেটাল ডিটেক্টর সরিয়ে নেয় ইসরায়েল।

গত বুধবার রাতে নজরদারি ক্যামেরা ও লোহার ব্যারিকেড প্রত্যাহার করে। তবে প্রতিবাদ বিক্ষোভে হতাহতের সংখ্যাও কম নয়। পাঁচজন ফিলিস্তিনি ইতোমধ্যেই মারা গেছে। আর আহত হয়েছে ১০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি। এ অবস্থায় সবাইকে সতর্ক থাকার কথা বলেছেন ফিলিস্তিনের প্রবীন ধর্মীয় নেতারাও। তবে সমগ্র ফিলিস্তিন ইসরায়েলের এ পিছু হটাকে এক বিজয় বলেই মানছে।

ঢাকাটাইমস/২৮জুলাই/কেএস/এমআর