‘প্রধান বিচারপতি একা নন’

প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০১৭, ১৭:৫৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরি শৃঙ্খলা বিধামালা ও ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের বক্তব্যকে দুঃখজনক, অনভিপ্রেত ও আপত্তিকর বলছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। সংগঠনটি এর নিন্দা জানিয়ে বলেছে, প্রধান বিচারপতি দেশের সব আইনজীবীর কথা বলেছেন। কাজেই তিনি একা নন।

বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটোরিয়ামে সমিতির পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়। এ সময় দেশের সব আইনজীবীকে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে থাকার আহ্বান জানায় সমিতি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। সঞ্চালনা করেন সম্পাদক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

লিখিত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘বিচারকদের জন্য খসড়া বিধিমালা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হচ্ছে। বিশেষ করে মাননীয় আইনমন্ত্রী এই ব্যাপারে আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করেছেন। তিনি অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধানে যে ক্ষমতা সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়েছে তা সুপ্রিম কোর্ট নিয়ে নিতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন।’ আইনমন্ত্রীর এ বক্তব্যের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শিত হয়েছে অভিযোগ করে অবিলম্বে মন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ করে আপিল বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের দাবি জানান তিনি।

বিচার বিভাগ নিয়ে প্রধান বিচারপতি নিজস্ব কোনো বক্তব্য দেননি বলে উল্লেখ করে সমিতির সভাপতি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির বক্তব্য সারা দেশের আইনজীবীদের বক্তব্য। আইনের শাসন রক্ষায় তার এই বক্তব্য। কাজেই তিনি একা নন। সারা দেশের বার সমিতি এবং আইনজীবীরা তার এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত। আইনমন্ত্রীর বক্তব্যে আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তিনি নিজেও একজন আইনজীবী। তার উচিত এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত থাকা।’

ষোড়শ সংশোধনীর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর অ্যাটর্নি জেনারেলের দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যেতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আমি বলব, বাহাত্তরের সংবিধানে প্রথম আঘাত আজকের সরকারই করেছে। তারাই চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ওই সংবিধান পরিবর্তন করেছে। অথচ অ্যাটর্নি জেনারেল বলছেন বাহাত্তরের  সংবিধানে ফিরে যেতে পারলেন না।’

আপিল আদালতের নির্দেশনায় কোথায় বাহাত্তরের সংবিধানের বরখেলাফ হলো প্রশ্ন তুলে এই আইনজীবী বলেন সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করেন। তিনি বলেন, ’৭২-এর সংবিধানে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগের নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচারবিভাগীয় দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি দান, ছুটি মঞ্জুরি ) ও শৃংখলা বিধান সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত থাকিবে।’ 

(ঢাকাটাইমস/২আগস্ট/এমএবি/মোআ)