কঠিন জীবনযুদ্ধে নেকবর-রিজিয়া দম্পতি

প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০১৭, ০৮:১২

জহুরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

অন্যরকম এক জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের নেকবর আলী ও রিজিয়া বেগম দম্পতি। তাদের এক মেয়ের বয়স ২৬, আরেক মেয়ের বয়স ২৩ ও অপরটির বয়স ১৯। তারা তিনজনই জন্মের পর শারীরিক, মানসিক ও বাক প্রতিবন্ধী। তিনটি সন্তানেরই হাত-পা বিকলাঙ্গ। হাঁটা চলারও নেই কোনো শক্তি। এছাড়াও ধীরে ধীরে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা।

এক কঠিন জীবনযুদ্ধে তাদের পরিবারটি। মেয়েদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে এরই মধ্যে জায়গা-জমি বিক্রি করে প্রায় নিঃস্ব হয়ে গেছে পরিবারটি। তাদের সহায়তায় সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

নেকবর আলী ঢাকাটাইমসকে জানান, লিপিয়ারা, লতামনি ও ঝুমুরের জন্মের পর থেকেই এই সমস্যা। জন্ম স্বাভাবিক হলেও সময় বাড়ার সাথে সাথে অজানা রোগে শারীরিক, মানসিক ও বাক প্রতিবন্ধী হয়ে যায়।

লিপিয়ারা লতামনি ও ঝুমুরের মা রিজিয়া বেগম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘অভাবের সংসারে আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না তাদের চিকিৎসা করানো। আমরা স্বামী-স্ত্রী এই প্রতিবন্ধী মেয়েদের সাথে দুইজনেই প্রতিবন্ধী হয়ে গেছি।’ রিজিয়া বলেন, ‘আমার পরিবারের প্রতি কারো চোখ পড়ে না।’ তিনি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।  

নেজামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আমিনুল হক ঢাকাটাইমসকে জানান, ডিমকইল এলাকার হতদরিদ্র নেকবর আলী ও রিজিয়া বেগমের তিন মেয়েই প্রতিবন্ধী। দিন দিন আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে। তাদের চিকিৎসা করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

চেয়ারম্যান জানান, একদিকে অভাবের সংসার অন্যদিকে অসুস্থ সন্তানদের চিকিৎসা খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে হতদরিদ্র পরিবারটি। অসুস্থ সন্তানদের চিকিৎসায় তাই বিক্রি করতে হয়েছে জমি-জিরাত সবই। খরচ মেটাতে না পেরে বর্তমানে বন্ধ রয়েছে চিকিৎসাও। হতদরিদ্র এই বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তা তাদের অবর্তমানে মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে।

এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, অসহায় এই প্রতিবন্ধী পরিবারটির খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সরকার ও বিত্তবানদের সহায়তা পেলে আর দশটা মানুষের মতো স্বাভাবিক জীবন না পেলেও হয়তো লিপিয়ারা, লতামনি ও ঝুমুরের ভবিষৎ নিশ্চিত করা যেত এমন প্রত্যাশায় দিন কাটে পরিবারটির।

(ঢাকাটাইমস/০৯আগস্ট/প্রতিনিধি/জেবি)