দেওবন্দ মাদ্রাসায় তাবলিগের কাজে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০১৭, ০৮:২৪ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০১৭, ০৮:২৭

ঢাকাটাইমস ডেস্ক

ভারতের প্রখ্যাত দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দে তাবলিগ জামাতের সবধরনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কর্তৃপক্ষ। তাবলিগের নেতৃত্ব নিয়ে কেন্দ্রের বিরোধ প্রকাশ্যে আসার পর ছাত্রদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হতে পারে এই আশঙ্কায় এমন সিদ্ধান্ত নিলো কর্তৃপক্ষ।

তাবলিগ জামাতের উদ্ভাবক মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস এই দেওবন্দ মাদ্রাসার ছাত্র। দারুল উলুম দেওবন্দকে তাবলিগ জামাতের অন্যতম উদ্ভাবনস্থল হিসেবে মনে করা হয়। দারুল উলুম দেওবন্দ এই সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় জানিয়েছে, তারা কোনোভাবেই তাবলিগের বিরুদ্ধে নয়। তাবলিগের দ্বারা বৈপ্লবিক অনেক কাজ হয়েছে। তবে যে বিরোধ চলছে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে তা তাদেরকে নিরসন করতে হবে, না হলে তাবলিগের কোনো কার্যক্রম দেওবন্দে চলবে না।

তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম শুরা বা পরামর্শের ভিত্তিতে চলে আসছে বহু বছর ধরে। কয়েক বছর আগে তাবলিগের বিশিষ্ট মুরব্বি মাওলানা জোবায়েরুল হাসান ইন্তেকালের পর এটা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। তাবলিগের শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা সা’দ নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গেলে মূলত বিরোধের সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের জেরে তাবলিগের মূল কেন্দ্র দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ থেকে শীর্ষ অনেক মুরব্বি চলে গেছেন।

তাবলিগের এই বিরোধের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। কাকরাইলেও কয়েক দফা ছোটখাট সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের আলেমদের পক্ষ থেকে এই বিরোধ নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। এজন্য অনেক আলেম ইতোমধ্যে তাবলিগবিমুখ হয়েছেন।

বুধবার জরুরি বৈঠকের পর দারুল উলুম দেওবন্দ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে নিজামুদ্দিন মারকাজে বিবাদ চরমে পৌঁছেছে৷ এর প্রভাব বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্রদের মধ্যেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ দেওবন্দেও এ নিয়ে ছাত্রদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হয়েছে৷ আর এটা ধীরে ধীরে ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে৷ যা দারুল উলুমের জন্য খুবই ক্ষতিকর বিষয়ে পরিণত হবে৷ যতদিন পর্যন্ত মারকাজের চলমান বিবাদ না মিটবে ততদিন দেওবন্দে তাবলিগের কাজ বন্ধ থাকবে৷

দেওবন্দের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একটি নোটিশে বলা হয়েছে, ‘নিজামুদ্দিন মারকাজে দুই গ্রুপের চলমান সংকটের সাথে দারুল উলুম দেওবন্দের নূন্যতম সম্পর্ক নেই৷ কিছু দীনি ভাই বলতে চেষ্টা করছেন, নিজামুদ্দিনের বাংলাওয়ালি মসজিদের সংকটের সাথে দেওবন্দেরও সংশ্লিষ্টতা আছে৷ যা সম্পূর্ণই ভুল ধারণা৷ বরং দেওবন্দ আগেও আন্তরিকতার সাথে বলেছে, এখনো বলছে চলমান সংকট তাবলিগ জামাতের ভেতরগত বিষয়৷ এর সমাধান তাবলিগের আকাবির মুরুব্বিদেরই করতে হবে৷’

বুধবার দেওবন্দ মাদ্রাসার ছাত্রদের ডেকে এ ব্যাপারে বক্তব্য দেন দেওবন্দের মুহতামিম (প্রিন্সিপাল) আল্লামা মুফতি আবুল কাসেম নোমানি, শায়খুল হাদিস আল্লামা সাঈদ আহমদ পালনপুরী এবং জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা সাইয়্যিদ আরশাদ মাদানি৷ তারা জানান, কোনো ছাত্র আইন অমান্য করে দেওবন্দ মাদ্রাসায় তাবলিগের কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

(ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/জেবি)