নেপালে ‘চাওপাদী’ পালনে বাধ্য করলেই জেল

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০১৭, ১২:৫৪ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০১৭, ১২:৫৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

নারীদের পিরিয়ড চলাকালীন তাদের বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে বাধ্য করলে এবার থেকে জেল ও জরিমানা দুটোই হতে পারে নেপালে। বুধবার নেপাল পার্লামেন্টে এই আইন পাশ করলো দেশটির সরকার।

নেপালে এখনও এমন অনেক সম্প্রদায় রয়েছে যারা পিরিয়ড চলাকালীন নারীদের 'অপবিত্র' মনে করে এবং পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে বাধ্য করে। এই ব্যবস্থার অবসান ঘটাতে নতুন আইন প্রণয়ন করা হলো নেপালে।

পিরিয়ডের সময় নারীদের বিচ্ছিন্ন করে রাখার এই ব্যবস্থা ‘চাওপাদী’ নামে পরিচিত নেপালে। মূল বাড়ির বাইরে একটি কুঁড়েঘরে সেই সময় নারীদের রাখা হয়। সেই সময় তাদের কেউ স্পর্শ করে না। পিরিয়ড চলাকালীন নারীরা নিজে থেকে খাবার নিয়ে খেতে পারেন না, গবাদি পশুকে স্পর্শ করতে পারে না, পুজো বা অন্য কোনও ধর্মীয় আচারে অংশ নিতে পারে না।

এই অমানবিক প্রথাকে ২০০৫ সালেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল নেপালের সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু চাওপাদীর বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ছিল না। তাই এই প্রথা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।

নতুন আইনে কেউ কোনও নারীকে চাওপাদী করতে বাধ্য করলে তার তিন মাসের জেল এবং তিন হাজার রুপি পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। গত মাসে চাওপাদী চলাকালীন কুঁড়েঘরে থাকতে গিয়ে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় এক কিশোরীর। তারপরই নড়েচড়ে বসে নেপাল সরকার।

চাওপাদী পালন করতে গিয়ে অরক্ষিত এসব স্থানে বাস করার সময় ধর্ষণের ঘটনাও ঘটে। তবে এরপরও নেপালের বহু প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো এই প্রথা সচল। দেশটির বহু মানুষ এখনো বিশ্বাস করে যে, ঋতুবতী কিশোরী বা নারীদের আলাদা করে না রাখলে তারা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। এই সময় কিশোরী বা নারীদের দুধ পান করাও নিষিদ্ধ থাকে। এমনকি খাবারও পরিমাণে কম পায় তারা।

এদিকে এসব ঘটনা বন্ধে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে বহুদিন থেকেই অভিযোগ করে আসছিল দেশটির মানবাধিকারকর্মীরা। তবে সরকারের দাবি, দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা এসব কুসংস্কার এত সহজে বন্ধ করা সম্ভব না। কিন্তু এবার আইন প্রণয়ন করে চাওপাদী প্রথা বন্ধে ব্যবস্থা নিল সরকার।

তবে সামাজিক আচরণ ও মনোভাব বদলাতে আরো সময়ের প্রয়োজন বলে মনে করছে নেপালের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

(ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/জেএস)