বিমানবন্দরে পাওয়া শিশুটিকে দেয়া হচ্ছে আইনজীবী সেলিনাকে

প্রকাশ | ১৬ আগস্ট ২০১৭, ১৮:১৬ | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০১৭, ১৮:২৩

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফেলে যাওয়া দশ মাসের কন্যাশিশু ফাতেমাকে আইনজীবী সেলিনা আক্তার দম্পতিকে দেয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে আদালত।

বুধবার ঢাকার শিশু আদালতের বিচারক (অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ) মো. হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।

আগামী ২২ আগস্টের মধ্যে ওই দম্পত্তি শিশুটির নামে পাঁচ লাখ টাকা এফডিআর করে আদালতে ওই সংক্রান্তে প্রতিবেদন দাখিল করলে ওইদিন শিশুটিকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হবে।

আইনজীবী সেলিনা ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সিনিয়র ‘ল’ অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। তার স্বামী মো. আলমগীর হোসেন একজন ব্যবসায়ী। দশ বছর বিবাহিত জীবনে ওই দম্পতি নিঃসন্তান।

আদালতের আদেশের পর ওই দম্পত্তি জানান, দশ বছর বিবাহিত জীবনে আমরা নিঃসন্তান। শিশুটিতে পেলে আমার মাতৃত্বের স্বাধ পূরণ হবে। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

আদালতে ৯ জন নিঃসন্তান দম্পত্তি শিশুটির হেফাজত পাওয়ার জন্য ওই আদালতে আবেদন করেন। এদিন বিচারক ওই সব দম্পতির বক্তব্য পৃথকভাবে খাস কামরায় বসে শোনেন। এরপর আদেশ দেন। আদেশের আগে বিচারক বলেন, যারা আবেদন করেছেন তারা সভাই শিশুটিকে হেফাজতে পাওয়ার যোগ্য। অনেক দম্পতি শিশুটির নামে বাড়ি-গাড়ি পর্যন্ত লিখে দিতে চেয়েছেন। তবে আদালত শুধু অর্থ সম্পদ বিবেচনা করে আদেশ দিচ্ছে না। শিশুটির সার্বিক মঙ্গল বিবেচনায় নিয়ে আদেশ দিচ্ছেন। আর ভবিষ্যতে যদি শিশুটির বাবা-মা পাওয়া যায় এবং তারা দাবি করেন তাদের হাতে তখন শিশুটিকে তুলে দিতে হবে।

গত ৯ জুলাই জর্ডান থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরছিলেন জামালপুরের শম্পা। বিমানে তার সঙ্গে এক নারীর পরিচয় হয়। ওই নারীর কোলে শিশুটি ছিল। শম্পা জর্ডানে গৃহকর্মী হিসেবে গিয়েছিলেন। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানতে পারেন অজ্ঞাত নারীও একই কাজে সেখানে গিয়েছিলেন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ওই বিমান বিজি ০৮৫ ফ্লাইট অবতরণের পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে কাস্টমস থেকে মালপত্র নিয়ে বের হতে শুরু করেন যাত্রীরা। বিমানবন্দরের ক্যানওপি পার্কিং এলাকায় স্বজনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ওই ফ্লাইটের যাত্রী শম্পা। এ সময় বিমানে পরিচয় হওয়া ওই নারী তার কাছে ছুটে আসেন। অনুরোধ জানিয়ে বলেন- 'আপা আমার শিশুটাকে একটু ধরেন। ভেতরে মালপত্র রয়েছে, নিয়ে আসছি।' আগে কথা হওয়ায় সরল বিশ্বাসে শিশুটিকে কোলে তুলে নেন শম্পা। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও সেই নারী আর ফেরেননি। দুই থেকে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করে স্বপ্না তার বাসায় শিশুটিকে নিয়ে যান। পরের দিন বিকাল ৩টার দিকে শিশুটিকে নিয়ে বিমানবন্দরের এপিবিএন পুলিশের কাছে আসেন। পরে এ ব্যাপারে বিমানবন্দর থানায় জিডি করা হয় (জিডি নং ৪০৪)। পরবর্তী সময়ে শিশুটিকে রাজধানীর তেজগাঁও এ পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনে (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পাঠানো হয়। বর্তমানে শিশুটি সেখানেই রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/আরজে/জেডএ)