‘রায় নিয়ে মন্ত্রীরা আবোল-তাবোল বক্তব্য দিচ্ছেন’

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০১৭, ২৩:১০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ষোড়শ সংশোধনীর রায়কে কেন্দ্র করে মন্ত্রীরা আবোল-তাবোল বক্তব্য দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে রবিবার বিকালে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবী বলেন, ‘রায়কে কেন্দ্র করে মন্ত্রীরা আবোল-তাবোল বক্তব্য দিচ্ছেন। কীভাবে তারা বলেন যে, রাজনৈতিক বিবেচনায় বিচারক বা প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়েছে? তার মানে কী? তারা নিজেরাই স্বীকার করছেন যে, আমরা পুরো বিচার বিভাগকে, উচ্চ আদালতকে রাজনীতিকরণ করে ফেলেছি। হঠাৎ করেই তাদের ভেতরে যে কথাটি ছিল, সেটি বের হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে যে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হবে, সেটিও রাজনৈতিক বিবেচনায় হবে।’

রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ হলে দেশে বিচার বিভাগের সংকট আরও বাড়বে বলে মন্তব্য করেন সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগ সংকটে পড়লে কোনো রাজনৈতিক দলও এখানে ভালোভাবে থাকতে পারবে না এবং গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখীন হবে।’

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক সরকারের একটি লাভজনক পদে থেকে তার এ ধরনের বক্তব্য সম্পূর্ণ বেআইনি, শৃঙ্খলাজনিত অপরাধ ও নজিরবিহীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থেকে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের বিরুদ্ধে শুধু বক্তব্য দিয়েই ক্ষান্ত হননি। তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অশোভন, অমর্যাদাপূর্ণ ও সংবিধানবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন।’

সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনীর আগেও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল রেখে দেয়া হয়েছিল। বিচারপতি খায়রুল হক তার রায়ে স্বচ্ছতা আছে বলেই সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল রেখে দিলেন। এতে তখন তিনি হাতও দেননি।’

রায়ের বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের অবস্থানের সমালোচনা করে সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘কিন্তু একটি মাত্র রায় নিয়ে তিনি যেভাবে কথা বলা শুরু করেছেন তাতে আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি আদৌ প্রধান বিচারপতি হওয়ার যোগ্য ছিল কি না।’

রায় নিয়ে রাজনীতি করার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনীর রায়কে কেন্দ্র করে যারা ক্ষমতায় আছেন এবং যারা ক্ষমতায় যেতে চায় তারা উভয়ে বিচার বিভাগকে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।’

সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল বারী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের কয়েক দিন পরই একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী রায়ের বিষয়ে আলাপ করার জন্য প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আলাপ করেছেন এবং প্রকাশ্যে গণমাধ্যমে তা প্রচার করেছেন।

কোনো মামলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বা সংক্ষুব্ধ পক্ষের মাননীয় বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা একটি নজিরবিহীন ঘটনা মন্তব্য করে জাহিদুল বারী বলেন, এতে একদিকে বিচার বিভাগের মান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে, অন্যদিকে বিচার বিভাগের ওপর সরকারি দল এবং সরকার চাপ প্রয়োগ করছেন, জনমনে এমন ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি এস এম এ সবুর, শফিকুর রহমান, আসাদুল্লাহ তারেক, এ কে এম জগলুল হায়দার, আসাদুল্লাহ তারেক, ইয়াহিয়া দুলাল, নাজমুন নাহার বিউটি ও আইনুন নাহার শিউলি প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/এমএবি/জেবি)