চট্টগ্রাম বন্দরে সিবিএ নির্বাচন কাল

প্রকাশ | ২৩ আগস্ট ২০১৭, ২২:১৯

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

প্রায় একযুগ পর চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদ (সিবিএ) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বৃহস্পতিবার। এতে তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। প্যানেল তিনটি শাসক দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত। এ নিয়ে চলছে জোর প্রস্তুতি।

কর্মচারী পরিষদ সূত্র জানায়, নির্বাচনে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী সমর্থিত আবদুর রহমান সিকদার-রফি উদ্দিন খান ও শহীদুল আলম বকুল প্যানেল, মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দীন সমর্থিত আবুল মনছুর আহমেদ-মো. ফখরুল ইসলাম প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

এছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এ লতিফ ও  ডা. আফসারুল আমীন সমর্থিত সৈয়দ আহমদ বাদল ও সালাউদ্দিন খান প্যানেল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

তবে এ পর্যন্ত কোনো প্যানেলের প্রতিই সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ সরাসরি প্রচারণায় নামতে দেখা যায়নি।

সূত্র জানায়, কর্মচারী পরিষদ তথা সিবিএর ২৫ পদে তিন প্যানেলে শতাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীও আছেন চারজন। ভোটার ৩ হাজার ৮০০। নিয়ম অনুসারে নির্বাচনে দশ শতাংশ মহিলা প্রার্থী থাকার কথা। কিন্তু ৩ প্যানেলের মধ্যে একটি প্যানেল থেকে একজন মহিলা প্রার্থী। এছাড়া আরো একজন স্বতন্ত্র মহিলা প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ভোটাররা জানান, প্রায় এক যুগ পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই নির্বাচন। তাই বন্দর কর্মচারীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ তৈরি হয়েছে। চলছে ব্যাপক প্রচারণা ও লবিং। এরমধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালনকারী বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বাধীন আবুল মনছুর আহমেদ ও মো. ফখরুল ইসলাম প্যানেলের প্রতি সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের সমর্থন রয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে।

একইভাবে আবদুর রহমান সিকদার-রফি উদ্দিন খান ও শহীদুল আলম বকুল প্যানেলের প্রতি নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থনে রয়েছেন। এ প্যানেল মূলত মনছুর-ফখরুল প্যানেলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আলাদা সিবিএ গঠন করায় বন্দর কর্তৃপক্ষ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাদের চাকরি থেকে সাময়িক বহিষ্কারও করা হয়।

এ প্রসঙ্গে সভাপতি প্রার্থী আবদুর রহমান সিকদার, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রফি উদ্দিন খান ও কার্যকরী সভাপতি শহীদুল আলম বকুল বলেন, কর্মচারীদের অধিকার রক্ষা আন্দোলনে আমাদের বহিষ্কারের বিষয়টি ভোটারদের মাঝে প্রচার করা হচ্ছে। একযুগ ধরে নির্বাচন না দেয়ার কারণ এবং এর জন্য কারা অন্তরায় ছিল ভোটারদের মধ্যে তাও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কারা ভূমিকা রাখতে পারবেন তাও আমাদের প্রচারণায় রয়েছে।

তবে বন্দরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মচারী মো. আজাদ, মসিহ উদ্দিন, দিপক বড়ুয়াসহ কয়েকজন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর এবং কর্মচারীদের স্বার্থে যারা কাজ করবেন তাদের ভোট দেয়া হবে। গত কয়েক বছর ধরে যারা একনাগাড়ে দায়িত্বে ছিলেন তাদের কর্মকাণ্ড এবং তারা কতটুকু নিজেদের স্বার্থে, কতটুকু বন্দরের ও কর্মচারীদের স্বার্থে কাজ করেছেন তা দেখে ভোট দেবেন।

চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালক পর্ষদ (প্রশাসন) সদস্য মো. জাফর আলম বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এক পক্ষের  দাবির প্রেক্ষিতে বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত থেকেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে রায় দেয়া হয়। ফলে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বন্দর প্রশাসন সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে।

তিনি জানান, ২০১০ সালে বন্দরে সর্বশেষ সিবিএ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সিবিএর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন চাকরি থেকে অবসর ও মারা গেলেও পরবর্তী দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

(ঢাকাটাইমস/২৩আগস্ট/আইকে/এলএ)