আ.লীগ নেতাদের বাধায় দরপত্র জমা দিতে পারেনি নাভানা

প্রকাশ | ২৮ আগস্ট ২০১৭, ২৩:৩২

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের দুই প্রভাবশালী নেতা ও সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই যুগ্ম সম্পাদকের হস্তক্ষেপের কারণে প্রায় ৪০ কোটি টাকা বাজেটের একটি ব্রিজ নির্মাণ কাজের দরপত্র জমা দিতে পারেনি দেশের অন্যতম ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নাভানা কন্সট্রাকশন লি.।

সোমবার নাভানা কন্সট্রাকশনের পক্ষ থেকে দরপত্র জমা দিতে আসলে ওই নেতাদের  ৩০ থেকে ৪০ জন অনুসারীদের বাধার মুখে তারা দরপত্র জমা না দিয়েই ফিরে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ১৩ আগস্ট একটি জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিকে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহর বাজার সংলগ্ন চান্দহর নদীতে ৩১৫ মিটার দৈর্ঘের একটি ব্রিজ নির্মাণ কাজের দরপত্র আহবান করা হয়। বিজ্ঞাপনে দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল জুলাই মাসের ১৭ তারিখ। পরবর্তীতে চলতি মাসের ৬ তারিখে বিজ্ঞাপনটি সংশোধন করে দরপত্র জমা দেওয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২৮ তারিখ (সোমবার)।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. শহীদ ও সায়েদুর জেলার দুই নেতার সাথে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দরপত্র জমা দেওয়া দুই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতা করে দেন।

এই অভিযোগ অস্বীকার করে সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. শহীদুর রহমান জানান, বিষয়টি সর্ম্পকে তার জানা নেই।

তবে সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিংগাইরের ওই দুই নেতাকে এলজিইডি অফিসের সামনে দেখা গেছে।

বেলা ১১ টার দিকে এলজিইডির মানিকগঞ্জ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল ও সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব কুমার সাহার অনুসারীরা দরপত্রের বাক্স পাহারা দিয়ে রেখেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাভানা কনস্ট্রাকশনের এক কর্মকর্তা জানান, নাভানার পক্ষ থেকে দরপত্র জমা দিতে গেলে সরকার দলীয় নেতাদের বাধায় আমরা তা জমা দিতে পারিনি। পরে তাদের সাথে কোনো ঝামেলা না করে আমরা ফিরে এসেছি।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে সুদেব সাহার সাথে কথা বলার জন্য।

এরপর বিষয়টি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব কুমার সাহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে আপেল সাহেবের কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল বারেক হাওলাদার জানান, সোমবার বেলা ১ টা পর্যন্ত দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল। বরিশালের কহিনুর এন্টারপ্রাইজ ও ঢাকার নবারুন এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিয়েছে। তবে, দরপত্র জমাদানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাধার বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।  

(ঢাকাটাইমস/২৮আগস্ট/জেডএ)