ঢাকা-১৪: আসলামের চ্যালেঞ্জ তুহিন

প্রকাশ | ৩০ আগস্ট ২০১৭, ০৮:২৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৪ আসনে আবার মনোনয়নপ্রত্যাশী বর্তমান সংসদ সদস্য আসলামুল হক। তবে মনোনয়ন-দৌড়ে তার সামনে চ্যালেঞ্জ হিসেবে আছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন। দুজনেরই দাবি, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভালো। তাই তারা আশা করছেন দলের মনোনয়ন নিজের পক্ষে আসবে।

সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হলে ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর এক বছরের কিছু বেশি সময় বাকি।

এরই মধ্যে নির্বাচনী হাওয়া লেগে গেছে দেশের সংসদীয় আসনগুলোর বিভিন্ন এলাকায়। ঢাকা-১৪ আসনেও ছোঁয়া লেগেছে এর। দু্ই মনোনয়নপ্রত্যাশী নিয়মিত জনসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন তৃণমূলে।

অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বৃহত্তর মিরপুর এলাকা নিয়ে ঢাকা-১১ সংসদীয় আসন ছিল। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আসন পুর্নবন্টনের মাধ্যমে একে বাড়িয়ে তিনটি সংসদীয় এলাকা করা হয়।

মিরপুর-১১ থেকে দারুস সালাম, শাহ আলী ও রূপনগর থানা নিয়ে গঠিত হয় ঢাকা-১৪ আসন। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আসলামুল হক আগামী নির্বাচনেও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনি দলের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে নিয়মিত উপস্থিত হন। এ ছাড়া তিনি স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগোযোগ রক্ষা করে চলচেন জানান তিনি।

দারুস সালাম এলাকার আবুল কাশেম নামের আওয়ামী লীগের একজন কর্মী বলেন, ‘এমপি সাহেব (আসলামুল হক) শাহ আলী, দারুস সালাম এবং রূপনগর এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এ ছাড়া বিগত দিনে বিএনপির নির্বাচন ঠেকাও আন্দোলন প্রতিরোধ, জঙ্গি প্রতিরোধ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।

টানা দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য থাকায় এলাকার জনগণের সঙ্গে  আসলামুলের একটা ভালো সম্পর্ক রয়েছে দাবি করে আবুল কাশেম বলেন, ‘এ ছাড়া তিনি সন্ত্রাস দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাই আগামী নির্বাচনে তার মনোনয়ন নিয়ে আমরা আশাবাদী।’

একই আশাবাদের কথা জানান এ আসনে আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনের কর্মীরা।

শাহ আলী থানা আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, ‘তুহিন আপা আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সংগ্রামের একজন পরিচিত মুখ। ১/১১ সরকারের সময় নেত্রীর (শেখ হাসিনা) মুক্তির আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এ ছাড়া বিএনপি-জামায়াত সরকারবিরোধী আন্দোলনে তিনি রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এ জন্য তাকে অনেক কারাবরণ ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল।’

তুহিনকে কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে উল্লেখ করেন ওই নেতা। তিনি বলেন, ‘নেতাকর্মীদের পাশে সব সময়ই থাকেন। সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছেন। এলাকার জনগণের সাথে তার একটা সম্পর্ক রয়েছে। আগামী নির্বাচনে ত্যাগী নেতাকে দলের হাইকমাণ্ড মূল্যায়ন করবে বলে আমরা আশা করি।

সাবিনা আক্তার তুহিনের বেড়ে ওঠা মিরপুর এলাকায়। বিএনপি-জামায়াতবিরোধী আন্দোলনের কারণে তাদের রোষানলে পড়েছিলাম আমি। এ ছাড়া একজন কর্মী হিসাবেই ১/১১ সময়ে নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে রাজপথে ছিলাম। সংসদ সদস্য হওয়ার আগেও আমি এলাকার মানুষেরসংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি হওয়ার পর আমি এলকার উন্নয়নে কাজ করছি।’

ঢাকা-১৪ আসনের মানুষের প্রতি তার বিশ্বাস আছে বলে জানান তুহিন। তিনি বলেন, ‘তারা মনে করে আমি মনোনয়ন পেলে উন্নয়নের ধারা আরও গতিশীল হবে। তারপরও আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের উপর শ্রদ্ধাশীল। তিনি নৌকা যাকে দিবেন তাঁর জন্য আমি কাজ করব।’

জানতে চাইলে স্থানীয় সংসদ আসলামুল হক ঢাকাটাইমসকে বলেন, দল কাকে মনোনয়ন দেবে, সেটা দলের হাইকমান্ডই নির্ধারণ করবেন। আমি দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা এ আসন থেকে যাকেই মনোনয়ন দেন না কেন সে যেন নির্বাচিত হতে পারে এ জন্য কাজ করছি আমি।

২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজধানী ঢাকার সংসদীয় আসন ছিল ১৩টি, যার মধ্যে পাঁচটি আসন মহানগরের বাইরে ছিল। বাকি আটটি ছিল ঢাকা মহানগরে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আসন পুর্নবন্টনের পরে রাজধানী ঢাকার সংসদীয় আসন বেড়ে দাঁড়ায় ২০টিতে। যার মধ্যে ১৫টি সিটি করপোরেশন এলাকায় পড়ে।

(ঢাকাটাইমস/৩০আগস্ট/টিএ/মোআ)