ঝিনাইদহের দুই বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন ইউএনও

প্রকাশ | ৩০ আগস্ট ২০১৭, ২২:৫৬

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাল্যবিয়ের আয়োজন করায় মেয়ের পিতা জাকারুল ইসলামকে এক হাজার টাকা জরিমানা করেছে মোবাইল কোর্ট। বুধবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছাদেকুর রহমান এ জরিমানা করেন।

মোবাইল কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে উপজেলার কমলাপুর গ্রামের জাকারুল ইসলামের মেয়ে ও স্থানীয় সুন্দরপুর-দুর্গাপুর আলীম মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণির ছাত্রীকে একই উপজেলার দুধরাজপুর গ্রামের আতর আলীর ছেলে মাছুমের সাথে বিয়ে দেয়া হচ্ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে মোবাইল কোর্ট চালিয়ে মেয়ের পিতাকে এক হাজার জরিমানা করা হয় এবং ওই ছাত্রীর বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেয়া হবে না মর্মে মেয়ের অভিভাবককের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়।

মোবাইল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট ছাদেকুর রহমান জানান, বাল্যবিয়ের গোপন খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে মোবাইল  কোর্টে মেয়ের পিতা জাকারুল ইসলামকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

অপর দিকে, কালীগঞ্জ পৌরসভার পশু হাসপাতাল পাড়ার পঞ্চম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী শাপলা নিজেই তার বাল্যবিয়ে রুখে দিল। বুধবার সকালে কালীগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গিয়ে সে বলে স্যার, আমি কালীগঞ্জ উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। আমার বিয়ের বয়স হয়নি। আমার মা বাবাসহ পরিবারের লোকজন জোর করে আমাকে বিয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমি বিয়ে করতে চাই না আমি পড়াশোনা করতে চাই। আমার বাল্যবিবাহ আপনি ঠেকান।

পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা বলে বাল্যবিয়ে দিলে কি কি অসুবিধা হয় সে সম্বন্ধে ধারণা দেন। শাপলা খাতুন কালীগঞ্জ পৌরসভার পশু হাসপাতাল পাড়ার আমিরুল ইসলামের মেয়ে।

ইউএনও ছাদেকুর রহমান জানান, মেয়েটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করার জন্য আমার কাছে আসে। এরপর বুধবার সকালে তিনি মেয়েটির বাড়িতে লোক মারফৎ খবর দিলে তার মা আমার অফিসে আসেন। তাদের বুঝিয়ে বিয়েটি বন্ধ করা হয়েছে। মেয়েটি লেখাপড়া করতে চায়।

তিনি জানান, সমাজের অন্য মেয়েরা যদি এভাবে বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তাহলে একদিন এ উপজেলা বাল্যবিয়ে মুক্ত হবে।

(ঢাকাটাইমস/৩০আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)