ত্যাগের মহিমায় পূর্ণ হোক জীবন
প্রকাশ | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:০৩
ঐ খুনের খুঁটিতে কল্যাণ-কেতু, লক্ষ্য ঐ তোরণ,
আজ আল্লার নামে জান্ কোরবানে ঈদের পূত বোধন!
ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্য-গ্রহ’ শক্তির উদ্বোধন!
- কোরবানী, কাজী নজরুল ইসলাম
ঈদুল আজহা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের এক বড় উৎসব। আল্লাহর নৈকট্য লাভের এই উৎসব ত্যাগের মহিমায় পরিপূর্ণ। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মুসলমানরা জিলহজ মাসের নির্দিষ্ট তিন দিন পশু কোরবানি করেন। এদিন পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে মনের নীচতা-অহংকার বর্জনেরও বার্তা ঘোষিত হয়।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকাটাইমসের পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা, লেখক, শুভাকাঙ্ক্ষীদের জানাই ঈদের শুভেচ্ছা।
কোরবানি আমাদের শিক্ষা দেয় উদার হতে, আত্মকেন্দ্রিক চিন্তাচেতনা বাদ দিয়ে সামগ্রিক কল্যাণে কাজ করতে। নিজের অর্থসম্পদ শুধু নিজের জন্যই নয়, সমাজের অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত ও দুস্থ মানুষের কল্যাণে ব্যয় করতে শেখায় ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হওয়ার মধ্য দিয়ে মানুষ নিজেকে নৈতিক ও আত্মিকভাবে পরিশীলিত করে।
প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে নবী হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নযোগে আল্লার কাছ থেকে আদিষ্ট হন তার প্রিয়তম বস্ত উৎসর্গ করার জন্য। হজরত ইব্রাহিমের কাছে সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন ছোট ছেলে ইসমাইল। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রিয় পুত্রকে কোরবানি দিতে উদ্যত হন তিনি। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হজরত ইব্রাহিমের ত্যাগের সদিচ্ছায় সন্তুষ্ট হয়ে ইসমাইলের পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি কবুল করেন।
প্রত্যেক মুসলমান যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি দেবেন এটাই ইসলামের বিধান।
আমাদের লক্ষ রাখতে হবে কোরবানি যেন শুদ্ধ নিয়তে হয়। আসমানি কিতাব আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না এগুলোর গোশত ও রক্ত, বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া।' (সূরা আল-হজ, আয়াত-৩৭) ত্যাগ ও উৎসর্গের শুদ্ধ নিয়তের পাশাপাশি কোরবানির মাংস বণ্টনের ক্ষেত্রেও শরিয়ত নির্দেশিত নিয়ম আমাদের মেনে চলতে হবে।
যেখানে-সেখানে কোরবানির পশু জবাই ও কাটাকুটির কারণে পরিবেশের দূষণ ঘটে। সেদিকটি যেন আমরা ভুলে না যাই। সিটি করপোরেশনকে যত দ্রুত সম্ভব পশুর হাট ও পাড়া-মহল্লা থেকে কোরবানির পশুর বর্জ সরিয়ে নিতে সচেষ্ট থাকতে হবে।
ঈদ মোবারক।
লেখক: সম্পাদক, ঢাকাটাইমস ও সাপ্তাহিক এই সময়।