ব্যস্ত সময় কাটছে প্রতিমা শিল্পীদের

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:৫২

রাজশাহী ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

আর মাত্র কিছু দিন পরই শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব। মণ্ডপে মণ্ডপে উঠবে দেবী দুর্গার প্রতিমা। তাই এখন প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত রাজশাহীর শিল্পীরা। সময় মতো প্রতিমা সরবরাহ করতে দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন তারা।

রাজশাহীতে এ বছর মোট ৪২০টি মণ্ডপে দুর্গা পূজার আয়োজন করা হবে। এরমধ্যে শুধু রাজশাহী মহানগরীতে ৬৭ থেকে ৭০টি পূজা মণ্ডপ হবে। নগরীতে ১০ থেকে ১২ জন এবং জেলার ৬০ থেকে ৭০ জন কারিগর এসব মণ্ডপে প্রতিমা সরবরাহ করবেন। তাই একেকজন কারিগরকে তিন থেকে পাঁচটি প্রতিমা তৈরির কাজ করতে হচ্ছে।

রাজশাহী নগরীর আলুপট্টির প্রতিমা তৈরির কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, কার্তিক চন্দ্র পাল ও গণেশ কুমার পালের কারখানার শিল্পীরা প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। সবাই ব্যস্ত প্রতিমার গায়ে কাদা মাটির প্রলেপ লাগাতে। আর কদিন পর এসব প্রতিমার গায়ে রঙ-তুলির আঁচড় পড়বে বলে জানান শিল্পীরা।

ঋষি কান্ত পালের ছেলে প্রতিমা শিল্পী কার্তিক চন্দ্র পাল। ২৫ বছর বয়সের কার্তিক ১৪ বছর বয়স থেকেই এ পেশায় জড়িত। তিনি জানালেন, পঞ্চমীর রাতের আগেই তাদের প্রতিমার সব কাজ শেষ করতে হবে। তাই বাংলা আষাঢ় মাসের ১৫ তারিখ থেকেই তারা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। সময় মতো প্রতিমা সরবরাহ করতে দিনরাত এক করে তারা কাজ করছেন।

প্রতিমা শিল্পীরা জানিয়েছেন, একটি প্রতিমা তৈরিতে শিল্পীদের ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিমা তৈরির জন্য লাগে তিন থেকে চার ভ্যান মাটি। খড় লাগে পাঁচ থেকে ছয় পৌন। এছাড়া কাঠ, বাঁশ, দড়ি, পেরেক, সুতা, ধানের তুষ ও কয়েক ধরনের রঙ কিনতে তাদের এই টাকা খরচ হয়। রাজশাহীতে একেকটি প্রতিমা ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

শিল্পীরা জানান, একটি প্রতিমা তৈরি করতে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ দিন। প্রতিমা তৈরিতে কয়েকজন শিল্পী একসঙ্গে কাজ করেন। একেকজন শিল্পী প্রতিমার এক এক কাজে হাত দেন। সবার সম্মিলিত কাজে পূর্ণতা পায় একেকটি প্রতিমা। প্রতিমা বিক্রির পর যে টাকা লাভ হয়, তা তারা সবাই মিলেই ভাগ করে নেন। এভাবে সারা বছরই টুকটাক তারা কাজ করতে থাকেন।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, চলতি মাসের ২৬ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে। এ জন্য মণ্ডপে মণ্ডপে এখন প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে।

জেলা প্রশাসক হেলাল মাহমুদ শরীফ জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজশাহীর সব পূজা মণ্ডপে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মণ্ডপগুলোতে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকে থাকবেন গোয়েন্দারা। মণ্ডপ এলাকায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কেউ যেন কোনো প্রকার সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে সে জন্য সর্বদা তৎপর থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/জেডএ)