নড়িয়ায় তিন লঞ্চ ডুবি: এখনো সন্ধান মেলেনি ১৫ জনের

প্রকাশ | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:৫৭

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ওয়াপদা লঞ্চঘাটে ডুবে যাওয়া তিনটি লঞ্চে থাকা ১৫ যাত্রীর সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। পদ্মা নদীতে প্রচণ্ড স্রোতে থাকার কারণে বিআইডব্লিউটিএ, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান চালাতে পারছে না।

নিখোঁজ যাত্রী ও লঞ্চগুলোকে খুঁজতে  বিআইডব্লিটিএ স্থানীয় জেলেদের নদীতে নামিয়েছে। জেলেরা জাল ফেলে ডুবে থাকা লঞ্চ শনাক্ত করার চেষ্টা করেছেন।

ওয়াপদা ও সুরেশ্বর লঞ্চঘাটের আশপাশের এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছে।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনরা বৃহস্পতিবার  সারাদিন ওয়াপদা, সুরেশ্বর ও দুলারচর এলাকায় পদ্মা নদীর তীরে অপেক্ষা করেছেন। অনেকের স্বজনরা পদ্মা নদীতে ট্রলার নিয়ে নিখোঁজদের খুঁজছেন।

ডুবে যাওয়া নড়িয়া-২ লঞ্চের সুকানি একই উপজেলার বিঝারী গ্রামের সজল তালুকদার নিখোঁজ রয়েছেন। তার সন্ধানে সুরেশ্বর ঘাটে বৃহস্পতিবার সারাদিন অপেক্ষা করেছেন তার স্ত্রী কল্পনা আক্তার। পাঁচ বছর বয়সী ছেলে ও আঠার মাস বয়সী মেয়েকে কোলে নিয়ে আহাজারি করছেন।  বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন।

বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, দুর্ঘটনার এক দিন আগে বাড়ি থেকে কাজে যায়। এভাবে অল্প সময়ের ব্যবধানে মানুষটা কোথায় হারিয়ে গেল। আমি শিশু সন্তানদের নিয়ে কোথায় যাব? কে আমাদের পাশে থাকবে?

চন্ডিপুর গ্রামের মোতালেব মোল্যা বলেন, নবজাতক ভাগনিকে নিয়ে বোন, ভগ্নিপতি ও আমার মা ঢাকা থেকে ফিরছিল। বোন, ভাগনি ও মা আমাদের ছেড়ে নিখোঁজ হয়ে গেল। বোনের লাশ পেলাম। মা ও ভাগনিকে পাইনি। ট্রলার নিয়ে পদ্মায় তাদের সন্ধান করছি।

সোমবার পদ্মা নদী ভাঙনের কারণে  নড়িয়া উপজেলার ওয়াপদা লঞ্চঘাটের পল্টুন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পানির স্রোতে পল্টুনে নোঙর করা তিনটি লঞ্চ ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া মৌচাক লঞ্চটি ওই ঘাট হতে ঢাকায়, নড়িয়া-২ ও মহানগরী লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জে চলাচল করত। লঞ্চে থাকা দুই যাত্রী ও ১৩ জন কর্মী এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

বুধবার সুরেশ্বর এলাকা থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ওই যুবকের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করার পর শরীয়তপুর পৌরসভার কোটাপারার পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরিন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষর (বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম পরিচালক (উদ্ধার) ফজলুর রহমান  বলেন, স্রোতের কারণে নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএর ডুবরিরা নদীতে নামতে পারছে না। নৌ বাহিনীর আরো ছয় সদস্যর একটি ডুবুরি দল বৃহস্পতিবার উদ্ধার কাজে যুক্ত হয়েছে।  লঞ্চগুলো সন্ধান করার জন্য আমরা স্থানীয় জেলেদের পদ্মা নদীতে নামিয়েছি। তারা জাল ফেলে লঞ্চ শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। 

মঙ্গলবার শনাক্ত করা মৌচাক লঞ্চটি স্রোতের কারণে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ওই লঞ্চটি উদ্ধার অভিযান আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)