জন্মদিনে সালমান শাহকে স্মরণ

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১২:০২ | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১২:১৭

আরিফ হাসান, ঢাকাটাইমস

১৯৭১ সালের আজকের এই দিনেই সিলেটের মাটিতে জন্মেছিলেন বাংলাদেশের কোটি কোটি ভক্তের প্রাণের নায়ক প্রয়াত সালমান শাহ। বেঁচে থাকলে আজ ৪৭ বছরে পা দিতেন তিনি। পিতা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী দম্পতির বড় ছেলে সালমান শাহ অভিনয় জগতের বাইরে শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন নামে পরিচিত ছিলেন। এটাই ছিল তার জন্মনাম। তবে চলচ্চিত্র জগতে তিনি সালমান শাহ নামে সুপরিচিত। অমর এ নায়কের জন্মদিনে কোটি কোটি ভক্ত প্রাণভরে স্মরণ করছে তাকে।

সালমান শাহ’র শিক্ষাজীবনঃ ছাত্রজীবনে খুলনার বয়রা মডেল হাইস্কুলে কিছুদিন পড়াশোনা করেছেন সালমান শাহ। এই স্কুলেই তাঁর সঙ্গে লেখাপড়া করেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের ‘প্রিয়দর্শিনী’ নামে পরিচিত নায়কা মৌসুমী। পরে স্কুল বদলে ১৯৮৭ সালে তিনি ধানমন্ডির আরব মিশন স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। এর পর রাজধানীর আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ধানমন্ডির মালেকা সায়েন্স কলেজ থেকে বিকম(বর্তমানে বিবিএস) পাস করেন।

নায়কের পারিবারিক ও বৈবাহিক জীবনঃ ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট মা নীলা চৌধুরীর বান্ধবীর মেয়ে সামিরা হকের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় অমর নায়ক সালমান শাহ’র। সামিরা হক ছিলেন পেশায় একজন বিউটি পার্লার ব্যবসায়ী। সালমানের কিছু ছবিতে তাঁর পোশাক পরিকল্পনাকারী হিসেবেও কাজ করেছেন সামিরা। সালমান শাহ পরিবারের বড় ছেলে। তাঁর আরেক ভাই রয়েছে। যিনি বর্তমানে মা নীলা চৌধুরীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।

অভিনয় জীবনঃ অমর নায়ক সালমানের অভিনয়ে হাতেখড়ি হয় নাটকের মাধ্যমে। ১৯৮৫ সালে বিটিভিতে প্রচারিত ‘আকাশ ছোঁয়া’ শিরোনামের একটি নাটকে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। দেশের স্বনামধন্য পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তাঁর। এই ছবিতে তাঁর নায়িকা ছিলেন স্কুল জীবনের সহপাঠী মৌসুমী। মৌসুমীরও প্রথম ছবি ছিল এটা। এর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি নায়ক সালমানকে। একের পর এক উপহার দিয়েছেন সুপারহিট সব ছবি।

মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে মোট ২৭টি ছবিতে অভিনয় করেছেন সালমান শাহ। যার প্রতিটিই ছিল ব্যবসাসফল। তাঁর অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘বিক্ষোভ’, ‘সুজন সখী’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, তোমাকে চাই’, ‘জীবন সংসার’, ‘বিচার হবে’, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘বুকের ভেতর আগুন’, ‘প্রেম প্রিয়াসী’ উল্লেখযোগ্য।

‘স্বপ্নের ঠিকানা’ তাঁর অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যবসাসফল। ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি সেসময়ই দেশব্যাপী ১৯ কোটি টাকা আয় করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ড গড়ে। যা আজও টিকে আছে। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন এম এ মালেক। এতে তারঁ বিপরীতে নায়িকা ছিলেন জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর। সালমান-শাবনূর জুটিকে বাংলা ছবির ইতিহাসে সর্বকালের সেরা জুটি হিসাবে এখনও বিবেচনা করা হয়।

প্রাণের নায়ক সালমান শাহে’র মৃত্যুঃ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অকালে মৃত্যুবরণ করেন সালমান শাহ। তাঁর মৃত্যু এখনও সকলের কাছে রহস্যজনক। অভিযোগ ওঠে, তাকে খুন করা হয়েছে। অনেকেই সালমান শাহ’র মৃত্যুর জন্য তাঁর স্ত্রী সামিরার দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। এমনকি পরবর্তীকালে সালমানের পরিবারের পক্ষ থেকে স্ত্রী সামিরা ও আরও কয়েকজনকে আসামি করে মামলাও দায়ের করা হয়। কিন্তু সিলিং ফ্যানের সঙ্গে নায়কের সেই ফাঁসিতে হত্যাকান্ডের কোনো আইনি সুরাহা এখনও পর্যন্ত শেষ হয়নি। ‘মন মানে না’ ছবির অর্ধেক কাজ শেষ করে মারা যান সালমান শাহ। তাঁর মৃত্যুর পর চিত্রনায়ক রিয়াজকে দিয়ে শেষ করা হয় ছবির বাকি কাজ।

সূত্রঃ উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ

ঢাকাটাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/এএইচ