তৃণমূল ছাড়ার পর দল থেকে বহিষ্কার মুকুল রায়

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:৩০ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:৩৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী মুকুল রায়কে আজ সোমবার ছয় বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে মুকুল রায় নিজাম প্যালেসে সংবাদ সম্মেলনে তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়ার কথা ঘোষণা দেন। একই দিন দুপুরে আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দলবিরোধী কাজের জন্য মুকুল রায়কে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করার কথা সাংবাদিকদের জানান তিনি।  

বেশ কিছু দিন ধরে মুকুল রায় দলের মধ্যে থেকেই দলকে দুর্বল করার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন পার্থ।

তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় তদন্তকারীর সংস্থার চাপের মুখে নতি স্বীকার করে মুকুল রায় দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করছিলেন।’

মুকুলের কার্যকলাপের ওপর বেশ কিছু দিন নজর রাখার পর তৃণমূলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি মুকুল রায় সম্পর্কে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল এবং তার শাস্তির সুপারিশ করেছিল বলে পার্থ এ দিন জানিয়েছেন। সেই সুপারিশ মতোই মুকুল রায়কে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো বলে জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

রবিবার মুকুল রায় মধ্য কলকাতার একটি পূজা উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন। তৃণমূল থেকে বহিষ্কার হওয়া আরেক সাংসদ কুণাল ঘোষের পাড়ার পূজা। দুই রাজ্যসভা সদস্য একসঙ্গেই পূজা উদ্বোধন করেন। তারপর এক মঞ্চে বেশ কিছুক্ষণ সময়ও কাটান। সেই মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেতৃত্বকে রবিবার সন্ধ্যায় কটাক্ষ করেছিলেন মুকুল। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ‘বাচ্চা ছেলে’ বলে খোঁচাও দিয়েছিলেন। তারপরই তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়, সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে মুকুল রায় সম্পর্কে দলের অবস্থান স্পষ্ট করা হবে।কিন্তু তৃণমূলের সেই সাংবাদিক বৈঠক হওয়ার আগেই সোমবার সকালে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন মুকুল রায়।

তিনি জানান, তৃণমূলের কার্যকরী সমিতির সদস্য থেকে তিনি পদত্যাগ করছেন।পূজার পরে সাংসদ পদ থেকে এবং তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও তিনি ইস্তফা দেবেন।

কেন দল ছাড়বেন, নতুন কোনও দল গড়ছেন কি না, বিজেপিতে যোগ দেবেন কি না, সে বিষয়ে এখনও ধোঁয়াশাই রেখে দিলেন মুকুল। শুধু বললেন, ‘কেন তৃণমূল ছাড়লাম, কেন পদত্যাগ করলাম, আজ কিছু বলছি না। যে দিন রাজ্যসভার পদ থেকে পদত্যাগ করব, সে দিন সবিস্তার সব জানাব।’

মুকুল রায় তৃণমূলের টিকিটে ২০১২ সালে ৩ এপ্রিল রাজ্যসভার সদস্য হন। ২০১২ সালের ২০ মার্চ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী করেন। দলের সর্বভারতীয় কমিটির তিনি ছিলেন সহসভাপতি। মমতার পরই স্থান ছিল তাঁর দলের ভেতর। খুচরা ব্যবসায়ে বৈদেশিক বিনিয়োগকে কেন্দ্র করে তৎকালীন মনমোহন সিং সরকারের সঙ্গে বিরোধ বাধলে মমতা ইউপিএ সরকার ছাড়েন। তখনই চলে যায় মুকুল রায়ের রেলমন্ত্রিত্ব।

সারদা অর্থ কেলেঙ্কারি, নারদ ঘুষ কেলেঙ্কারিতে উঠে আসে মুকুল রায়ের নাম। এতে মমতা অস্বস্তিতে পড়েন। এর জেরেই মমতার সঙ্গে মুকুল রায়ের দূরত্ব তৈরি হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/এসআই)