বললে অনেক কথাই বলা যায়: দুদু

প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:৪১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দুর্নীতির মামলায় বারবার আদালতে হাজিরা দেয়ার মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

তিনি বলেছেন, ‘কথা বললে অনেক কথাই বলা যায়। বেগম খালেদা জিয়ার উপর যে অত্যাচার হচ্ছে এটা জাতির উপর অত্যাচার। কারণ তিনি তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। প্রতিবারই তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আন্দোলন সংগ্রাম করে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাকে ঠেকানো আর জনস্রোত, গণজোয়ার ঠেকানো একই কথা।’

শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলন আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট: বন্ধু রাষ্ট্রের ভূমিকা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক জাতীয় পরামর্শ বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

দুদু অভিযোগ করেন, ‘পল্টন, সোহরাওয়ার্দী এমনকি ঢাকার বাহিরে কোন বিভাগীয় শহরেও আমাদের সমাবেশ করতে করতে দেয়া হয় না। যার কারণে ১৯ তারিখে সামান্য সুযোগ পেয়ে এয়ারপোর্ট এলাকায় প্রিয় নেত্রীকে দেখতে মানুষে মানুষে সয়লাব হয়ে গিয়েছিল। সেই অসুস্থ নেত্রীকে দুইদিন পরপর কোর্টে নিয়ে সরকার হয়রানি করছে। কিন্তু সরকার বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছে যে আগামী বছর তিনিই হচ্ছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান।’

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত নেই জানিয়ে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে জিততে হলে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী থাকতে হবে। এছাড়া তাদের কোনো ভবিষ্যত নাই।’

আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে এমনটা জানিয়ে দুদু বলেন, ‘দেশের চলমান সংকট থেকে বেরিয়ে আসার দুটো পথ আছে। একটি নির্বাচন অন্যটি হচ্ছে গণঅভ্যুত্থান। আমরা নির্বাচন করতে চাই। কিন্তু আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। তবু্ও নির্বাচনে আমরা যাবই। বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে মানুষের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনে যাবো।’

তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলছি- কারও কোন ক্ষমতা নেই বিএনপিকে নির্বাচনের বাহিরে রাখার। কারণ সামনের যে নির্বাচন এটা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচন হবে না। এই নির্বাচন হবে গণনির্বাচন।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক লুটপাট, নির্মম হত্যা ও দেশটাকে রসাতলে নিয়ে যাওয়ার সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের একটি পরিবর্তন দরকার। সে পরিবর্তনের নেতৃত্ব দেবে বিএনপি। সেই দলের নেত্রী চিকিৎসা শেষে তিন মাস পর লন্ডন থেকে দেশে আসলেন। দলীয় নেতাকর্মীরা যাতে তাঁকে অভ্যর্থনা দিতে না পারে সেজন্য বাস বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার, লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তাই সরকারকে বলবো লাইট বন্ধ করে লাভ কি? বেগম জিয়া তো অন্ধকারেও আলো। তিনি (খালেদা জিয়া) অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকলেও বাংলাদেশের মানুষ তাঁকে দেখতে পায়।’

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে দুদু বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বন্ধুহীন একটি দেশ। বাংলাদেশের কোন বন্ধু নাই। পাশের বাড়ির যে বন্ধুটা ছিল যাকে আমরা পরীক্ষিত বন্ধু বলি তিনিও এখন অন্যের হাত ধরে ফেলেছেন। কতই না তাদের খাওয়াইলাম, প্রেম ভালবাসা করলাম, কিন্তু বন্ধু আমাদের রোহিঙ্গা সংকটের সময় খুব দ্রুত মিয়ানমারের প্রধান রাষ্ট্রীয় পরামর্শদাতা অং সান সু চির হাত ধরে ফেললেন। মোদী একটি সাম্প্রদায়িক দেশের নেতা। যারা তাজমহলও ভাঙতে চায়, তার দেশে নির্বিচারে মুসলমানদের হত্যা করা হয়।’

সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বিএনপি সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান।

ঢাকাটাইমস/২১অক্টোবর/বিইউ/এমআর