মাগুরায় ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী উৎসব শুরু কাল

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:১২

মাগুরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

পাঁচ দিনব্যাপী মাগুরার ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা উৎসব শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার। এ উৎসবকে ঘিরে রেখে গোটা মাগুরা শহর বণির্ল রঙে সেজেছে। প্রতিমা, গেট, প্যান্ডেল, নয়নাভিরাম অলোকসজ্জা ও ডিসপ্লের আয়োজন করা হয়েছে।

ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা উৎসব উপলক্ষে দেশ-বিদেশের লক্ষ-লক্ষ দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে থাকবে।

এবার প্রতিমা শিল্পীরা প্রতিমা তৈরিতে পৌরণিক কাহিনী ও সমসাময়িক বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন। কোনো পূজামণ্ডপে বাহুবলী টুর আদলে প্রতিমা, আবার কোনোটিতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ, মা কাত্যায়নী ঐতিহ্যবাহী ঠেলাগাড়িতে করে পুত্র-কন্যাদের নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

তথ্যমতে, সারাবিশ্বে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দূর্গা পূজা সবচেয়ে বড় উৎসব হলেও শুধু মাগুরায় এর ব্যাতিক্রম। এ জেলায় ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে কাত্যায়নী পূজাই সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। তবে এ পূজার মূল ধর্মীয় অনুষ্ঠানিকতায় হিন্দু ধর্মের মানুষেরা অংশ নিলেও উৎসবে যোগ দেন সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ। সারাদেশ এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশ থেকেও দর্শনার্থীরা আসেন মাগুরায় অনুষ্ঠিত কাত্যায়নী পূজা দেখতে।

এটির সূচনা করেন শহরতলীর পারন্দুয়ালী  এলাকার  সতিশ মাঝি। সে সময় জেলেরা আশ্বিন মাসে মাছ ধরার মৌসুমে মাছ শিকারে নদীতে ব্যস্ত থাকার কারণে দুর্গাপূজা থেকে বঞ্চিত হতেন। যে কারণে দুর্গাপূজার ঠিক এক মাস পরে দুর্গার আদলে বহু প্রতিমা তৈরি করে তার বাড়িতে মহাধুমধামে এ পূজার আয়োজন শুরু করেন। স্বাধীনতার পরবর্তীকালে যা ব্যাপক বিস্তৃতি পায়।

দরিমাগুরা পূজা কমিটি সদস্য অপূর্ব সাহা জানান, দেশ-বিদেশের লক্ষ-লক্ষ দর্শনার্থীর  আগমনের কথা মাথায় রেখে অয়োজকদের পক্ষ থেকে এবার ব্যাপক আয়োজন করেছেন তারা। মন্দিরের প্রতিমা, গেট প্যান্ডেল সাজানো হচ্ছে ঐতিহাসিক সব নির্দশনের উপর ভিত্তি করে।

ছানা বাবুর বটতলা পূজা মন্দিরের প্রতিমা শিল্পী উজ্জ্বল গুরু বলেন, এবার তিনি বাহুবলী টু সিনেমার আদলে প্রতিমা বানিয়েছেন। যা দেশ-বিদেশ থেকে আসা দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হবে।

একই মন্দিরের গেট, প্যান্ডেল শিল্পী সমীর সাহা জানান, তিনি এবার কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের কাহিনির উপর ভিত্তি করে গেট প্যান্ডেল নির্মাণ করছেন, যা বাংলাদেশে এই প্রথম।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রদুৎ সিংহ জানান, শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে একাধিক বৈঠক করে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ বছর পৌর এলাকায় ১৫টিসহ জেলায় মোট ৯১টি মণ্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, এ পূজায় দেশ-বিদেশের লক্ষ-লক্ষ মানুষের আগমন ঘটে। যে কারণে পূজার সার্বিক নিরাপত্তায় শুধু মাগুরা নয়, আশপাশের একাধিক জেলা থেকে আসা অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সাদা পোশাকের পুলিশ, আনসার, ভিডিপি ছাড়াও সিসি ক্যামেরা দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৫অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)