স্থপতি রশীদের নকশায় হবে পুরাতন কারাগারের স্থাপনা

প্রকাশ | ৩০ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:৫৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

স্থপতি রশীদ ও তার দলের প্রকল্প অনুযায়ী পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের নতুন স্থাপনা নির্মাণের নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের জমা দেয়া ডিজাইন থেকে সোমবার সেরা নকশা নির্বাচন করা হয়।  

সেরা পরিকল্পনা নির্বাচন করেছেন সাত সদস্যের একটি জুরি বোর্ড। সোমবার বিকালে স্থপতি রশীদ ও তার দলের প্রকল্পটি প্রথম স্থান অর্জন করে। তাদের নকশা অনুযায়ী কারাগারের জোন-এ’তে সাড়ে তিন একর জমিতে মাল্টিপারপাস হল, কনভেনশন সেন্টার, সিনেপ্লেক্স, খাবার ঘর, সুইমিং পুল, গাড়ি পার্কিং, ওয়াটার বডি, ব্যাংক করা হবে।

কারাগার নির্ধারিত জোন-বি’এর ১ দশমিক ৪০ শতাংশ জমিতে বুক স্টোর, ফুলের দোকান, আন্ডারগ্রাউন্ড কার পার্কিং এবং জোন-সি এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, চার নেতা কারা স্মৃতি জাদুঘর, কনফাইন্ড হেরিটেজ এবং উদ্যানও তৈরি হবে তাদের দেয়া রূপরেখা অনুযায়ী।

প্রতিযোগিতায় মোট ৩৪টি দলের ডিজাইন জমা পড়ে। রাজধানীর শিল্পকলা একডেমিতে বিজয়ী ডিজাইনসহ পাঁচটি দলকে পুরস্কৃত করা হয়। দ্বিতীয় পুরস্কার পান স্থপতি আমিনুল এহসান ও তার দল। তবে অংশগ্রহণের শর্ত ভঙ্গ করায় বাতিল করা হয়েছে তৃতীয় হওয়া প্রতিষ্ঠানের নকশা।

এছাড়াও স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম দল, স্থপতি কাসিফ হাসনাইন দল ও স্থপতি আবু ফজল মাহমুদুন নবীর দলকে প্রশংসাপত্র দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘চমৎকার সব প্রকল্প পরিকল্পনা জমা দিয়ে তরুণেরা নিজেদের কর্মদক্ষতা প্রমাণ করেছে। নির্বাচিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পুরান ঢাকাবাসীর আর কোনো আক্ষেপ থাকবে না। গর্বের সঙ্গে বলতে পারবে যে, আমি চকবাজারে থাকি, আমি লালবাগে থাকি।’

অনুষ্ঠানে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার স্থানান্তরের পরপরই প্রধানমন্ত্রী একে পুরান ঢাকাবাসীর জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা করে দেয়ার নির্দেশনা দেন। আমরা সে অনুযায়ী কারাগারের মোট জমিকে তিনটি জোনে ভাগ করে কিছু শর্তাবলী আরোপ করে পরিকল্পনা চাই। স্থপতিদের জন্য যেমন শর্ত মেনে পরিকল্পনা দেয়ার কাজটা কঠিন ছিল, জুরি বোর্ডের সদস্যদের জন্য সেরাটা নির্বাচন করাও ঠিক তেমনি কঠিন ছিল। এরপরেও প্রতিযোগিতাটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাচিত পরিকল্পনাটি দেখিয়েছি। তিনি এটি দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন। আশা করছি আগামী বছরের সেপ্টেম্বর অক্টোবরের দিকে জোন-সি’র পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।’

প্রতিযোগিতায় জুরি বোর্ডের সদস্যরা হচ্ছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, প্রফেসর মুনতাসীর মামুন, বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের প্রফেসর ড. শায়ের গফুর, স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সাবেক সভাপতি প্রফেসর আবু সাঈদ এম আহমেদ এবং বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান ড. ইশরাত ইসলাম।

জুরি বোর্ডের সদস্যদের এক লিখিত সুপারিশে বলা হয়, পুরাতন কারাগারের মাটি খনন করে প্রাপ্ত প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শনগুলো কারা জাদুঘরে সংরক্ষিত থাকবে। খনন খাজ করার জন্য কারা মহাপরিদর্শক প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। এছাড়াও প্রকল্পটিকে হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করে সংরক্ষিত এলাকা রেখে ইমারন বিধিমালা অনুসরণের পরামর্শ দেন তারা।

(ঢাকাটাইমস/৩০অক্টোবর/টিএ/জেবি)