ঢাবি শিক্ষদের হাতাহাতি: মানববন্ধনে প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

প্রকাশ | ০৫ নভেম্বর ২০১৭, ১৬:১২ | আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৭, ১৬:২৫

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের নীল দলের সভায় হাতাহাতির ঘটনায় প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানীর পদত্যাগ ও ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মানববন্ধন হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের শিক্ষক (একাংশ) ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ খ ম জামাল উদ্দিনের ওপর হামলার প্রতিবাদে রবিবার বেলা ১২ টার দিকে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

গত বৃহস্পতিবার বিকালে টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের নীল দলের সভায় সহকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে  সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ খ ম জামাল উদ্দিন আহত হন।

মানববন্ধনে বক্তারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান রক্ষার্থে অবিলম্বে আলোচনার মাধ্যমে এই ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, যদি এই ঘটনার বিচার না হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে ওঠবে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হিসেবে যা কখনো কাম্য নয়।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ খ ম জামাল উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কোনো একক ব্যক্তি নয়, তাই তাকে নিয়ে সমালোচনা করা, তার বিরুদ্ধে যে কোনো সম্মানহানিকর বক্তব্যে শুধু তিনি অসম্মানিত হন না, এতে বিশ্ববিদ্যালয়েরও সম্মান ক্ষুণ্ন হয়।’

‘সেদিন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিককে লক্ষ্য করে প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীর তীর্যক বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছিলাম। তাই এক দল শিক্ষকের হাতে আমাকে অপমানিত হতে হয়েছিল।’

দুঃখ প্রকাশ করে জামাল উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য আমাদের আশ্বস্থ করেছিলেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এখনো আমরা তার পদক্ষেপের কোনো অগ্রগতি দেখিনি।’

মানববন্ধনে অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানীকে ছাত্রদলের সাবেক নেতা উল্লেখ করে বলেন, ‘প্রক্টর ওই সভায় আইন বহির্ভূতভাবে যোগ দেন এবং আরেফিন স্যারের বিরুদ্ধে তীর্যক বক্তব্য দেন। তাই আমরা অবিলম্বে তার পদত্যাগ দাবি করছি। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম রক্ষার্থে ছাত্র-শিক্ষকের এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চলতে থাকবে।’

নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক আবদুল আজিজ বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জার। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এরকম ঘটনা কোনো দিন ঘটেনি।’

তিনি বলেন, ‘দেশ, জাতি ও সমাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষদের মর্যাদার আসনে রেখেছে। কিন্তু এই ঘটনার মাধ্যমে আমরা জাতির কাছে আমাদের সম্মানের জায়গাটি প্রশ্নবিদ্ধ করেছি।’

‘এটি এখন শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় নয়, জাতীয় ইস্যুতে রূপ নিয়েছে। বিষয়টি আমাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করতে হবে’, বলেন অধ্যাপক আজিজ।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই ঘটনায় লজ্জিত ও মর্মাহত। আশা করি এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ভবিষ্যতে আর ঘটবে না।’

মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য শহিদ আকতার হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা চৌধুরী, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বায়তুল্লাহ কাদেরী, সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক শফিউল আলম ভূইয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক এ এম আমজাদ ও অধ্যাপক ফজলুর রহমান প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/৫নভেম্বর/ঢাবি/জেডএ