মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বড় হচ্ছে হুন্ডি সিন্ডিকেট

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৭, ১৮:৩৪ | আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭, ২০:৪৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দেশে বৈধ পথে বা ব্যাংকিং খাতে রেমিট্যান্স প্রবাহে ধস নামার পেছনে দায়ী মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং। নিয়ন্ত্রণের অভাবে এর মাধ্যমে মূলত সারা দেশে বাড়ছে হুন্ডি সিন্ডিকেট। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে ব্যাংকিং খাতের পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিংকেও কাজে লাগাতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটরিয়ামে ‘ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি: বাংলাদেশ কনটেকস্ট’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন বক্তারা। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।

ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে রেমিট্যান্সের একটি বড় অংশ অবৈধভাবে দেশে আসছে উল্লেখ করে ডেপুটি গভর্নর বলেন, ‘এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা বিভিন্ন উপায় খুঁজছি। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির যে লক্ষ্য ধরা হয়েছে তা বাস্তবায়নে অবৈধ চ্যানেলে লেনদেন বন্ধ করতে হবে।’ তবে হুন্ডি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিআইবিএমের সুপারনিউমেরারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসার কারণে জাতীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ জন্য মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেল কাজে লাগাতে হবে। গত পাঁচ বছর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পরিসর অনেক বেড়েছে। কিন্তু, রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রে এটি কাজে লাগানো হয়নি। দ্রুত মোবাইল ব্যাংকিংকে রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে না পারলে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

বিআইবিএমের সুপারনিউমেরারি অধ্যাপক হেলাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে খরচ বেশি। এর প্রভাব পড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহে। তাই খরচ কমিয়ে আনতে হবে। এ ছাড়া ব্যাংকারদের গ্রাহকদের সঙ্গে আরও ভালো আচরণ করতে হবে। কর্মদক্ষতা বাড়াতে হবে।

এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মেহমুদ হোসেন বলেন, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসকে কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। তা না হলে হুন্ডি কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। এমএফএসকে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মাধ্যমে তদারক করতে হবে।

কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) অধ্যাপক ড. শাহ মো. আহসান হাবিবের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা বিশ্বে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমলেও আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি কমেছে। কেননা, বিশ্বে আমাদের মার্কেট শেয়ার সবচেয়ে বেশি কমেছে। ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কমার কারণ হিসেবে গবেষণায় ব্যাংকের শাখার দূরত্বকে দায়ী করা হয়েছে। এ ছাড়া অর্থ পেতে সময়ক্ষেপণ, ব্যাংকারদের সদাচরণের অভাব, নানা ধরনের জবাবদিহি, সাপ্তাহিক ছুটি, অবৈধ অভিবাসী ইত্যাদি কারণকে দায়ী করা হয়েছে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী। গবেষণা প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন- বিআইবিএমের অধ্যাপক মো. নেহাল আহমেদ, সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/৯নভেম্বর/জেআর/মোআ)